শাল-গজারির বনে ঘেরা পাহাড়ি অঞ্চলটি। এ অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা নিয়ে রয়েছে বিশাল শাল-গজারি বন। বছেরের পর বছর সবুজে ঘেরা এ বনে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে একটি চক্র। বন বিভাগের আওতাভুক্ত সরকারি এ বনের বিভিন্ন জায়গায় আগুন প্রায় সময়ই আগুন জ্বলে। বসন্তকালে শুকনো পাতা ঝরায় বনে বেশি আগুন দেখা যায়। বন বিভাগের অসাধু কিছু কর্মচারী ও মাদকসেবী এ আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এতে বন দখলের পাশাপাশি হুমকিতে জীববৈচিত্র্য।
সরেজমিন দেখা যায়, ধলাপাড়া রেঞ্জের সাগরদিঘী বিটের আওতাধীন কামালপুর গ্রামের ফকির মার্কেট এলাকায় দিনে দুপুরে জ্বলে বন। অপর দিকে একই এলাকার ভূঁইয়া বাড়ি মোড়, কয়েদিসহ আশেপাশে থাকা বনে দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে পুড়ছে ছোট-বড় গাছপালা। বাতাসের কারণে মুহূর্তেই আগুন বনের গভীর থেকে গভীরে ছড়িয়ে যাচ্ছে। যার কারণে বন থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছে পশুপাখি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর এই মৌসুমে বন আগুনে পোড়ে। রাতে ও দিনে সুযোগ বুঝে আগুন দেওয়া হয়। তবে কে বা কারা আগুন দিচ্ছে তা সঠিকভাবে বলতে পারছে না কেউ।
কামালপুর এলাকার বাসিন্দা লাল মিয়া বলেন, প্রতিবছর এ সময় এলে বনে আগুন জ্বলে। প্রভাবশালীদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে অসাধু বন কর্মকর্তারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। রাত ও দিনে সুযোগ বুঝে তারা আগুন দিয়ে চলে যায়।
নায়েব আলী বলেন, “বনের ভেতর গরু-ছাগল পালন করতে হয়। আগুনে ঘাস, লতা-পাতা ও কীটপতঙ্গ ধ্বংস হয়। মধ্য রাতে বেশি আগুন দেওয়া হয়। মাদকসেবী অথবা বন বিভাগের লোকজন আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
সাগরদিঘী বিটের দায়িত্বে থাকা বন মালী শামছুল হক বলেন, “খবর পেয়ে কয়েক জায়গায় আগুন নিভিয়েছি। কে কখন বনে আগুন ধরিয়ে চলে যায়, এটা ধরা খুবই কঠিন। মনে হয় নেশাগ্রস্তরা এ আগুন দিতে পারে। আগুন ধরিয়ে বন পোড়ানোর ঘটনায় বন বিভাগের কেউ জড়িত থাকার কথা না।”
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান বলেন, “বনে আগুন লাগার বিষয়টি শুনেছি। বন বিভাগের কোনো কর্মচারী বনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকলে তাদের খুঁজে বের করা হবে।”