নোয়াখালীর কবিরহাটে একই স্থানে যুবলীগের দুইপক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুর ১টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কবিরহাট পৌরসভা ও এর কাছাকাছি এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
কবিরহাট পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক রায়হানের অনুসারী পৌরসভা যুবলীগের সভাপতি আবুল বাশার বাবুল ও কবিরহাট উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু জাফর আবির অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে এ ১৪৪ ধারা জারি করে।
এদিন দুপুর কবিরহাট বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট ফাতিমা সুলতানা।
ফাতিমা সুলতানা বলেন, এ সময় সব ধরনের সভা সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জানা যায়, কবিরহাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে যুবলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হানের সঙ্গে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু জাফর আবির ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের বিরোধ দেখা দেয়। এ বিরোধের জের ধরে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে ২০ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে উপজেলার নরোত্তমপুর, ঘোষবাগ ও ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন শাখার নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি প্রত্যাখ্যান করে ঝাড়ু মিছিল ও সমাবেশ করেছেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
এ ঝাড়ু মিছিলে মেয়র রায়হানের ভূমিকা আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক রায়হানের সঙ্গে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি-সম্পাদকের দুরত্ব প্রকাশ্যে বাড়তে থাকে। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ২ নভেম্বর বিকেলে উপজেলার কবিরহাট বাজারের বঙ্গবন্ধু চত্বরে একই সময়ে মেয়র রায়হান অনুসারী কবিরহাট পৌরসভা যুবলীগের সভাপতি আবুল বাশার বাবুলও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবির অনুসারীরা তারুণ্যের জয়যাত্রার সমাবেশের আহ্বান করে। এ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
কবিরহাট উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু জাফর আবির অভিযোগ করে বলেন, গত সাত দিন আগে থেকে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তারুণ্যের জয়যাত্রা সমাবেশ আহ্বান করে উপজেলা যুবলীগ। গতকাল বুধবার মেয়র রায়হানের ইন্ধনে আকস্মিক একই স্থানে সমাবেশ ডাক দেয় তার অনুসারী কবিরহাট পৌরসভা যুবলীগ সভাপতি বাশার। আমরা এখন অন্যস্থানে সভা করব। আমাদের অনেক বড় সমাবেশ হবে। তাদের সঙ্গে যুবলীগের গুটি কয়েক লোক ছাড়া কেউ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কবিরহাট পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক রায়হান বলেন, আমার কোনো গ্রুপ নেই। আমার সঙ্গে কারো বিরোধ নেই। দলের সবাই আমার জন্য সমান। আমি দুই গ্রুপকে নিয়ে বসেছি। বিষয়টি সমাধান করা যায় কিনা দেখছি।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন অবনতি না ঘটে এজন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কবিরহাট পৌরসভা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।