চার দিন বিরতির পর গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। এ উপলক্ষে তুরাগতীরে আবারও ঢল নেমেছে মুসল্লির। এরই মধ্যে ভরে গেছে প্রায় পুরো ইজতেমা মাঠ।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। বাদ ফজর মাওলানা ইলিয়াস বিন সাদ আমবয়ান করেন। তাৎক্ষণিকভাবে তা বাংলা তরজমা করে মাওলানা মনির বিন ইউসুফ।
সকাল ১০টায় ভারতের মাওলানা ইলিয়াস তালিমের মৌজু, জুমার আগে জুমার ফাজায়েলের ওপর ১০ মিনিট বয়ান করবেন মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। জুমার পরে বয়ান করবেন শেখ মোফলে (আরবি), তাৎক্ষণিকভাবে তা বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা শেখ আব্দুল্লাহ্ মনসুর, আসরের পর বয়ান করবেন মাওলানা মোশাররফ, মাগরিবের পর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ, তাৎক্ষণিকভাবে তা বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা জিয়া বিন কাশেম।
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক মোহাম্মদ সায়েম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ৪ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্ব শেষ হয়।
মুসল্লিদের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বয়ান। জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়, ইসলামি আলোচনা শোনা ও জিকির–আসকারের মাধ্যমে সময় কাটাচ্ছিলেন ইজতেমায় আগত মুসল্লিরা।
তাবলিগ জামাতের বিরোধের কারণে এবারও ইজতেমা হচ্ছে আলাদাভাবে। গত রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়েছে মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের ইজতেমা। আজ শুরু হচ্ছে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের ইজতেমা। রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ইজতেমার এবারের আসর।
দ্বিতীয় পর্বে যোগ দিতে বুধবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসতে থাকেন মুসল্লিরা। সরেজমিনে দেখা যায়, ইজতেমা মাঠের চারপাশে ৮টি সড়ক, ৫টি ভাসমান সেতুসহ মোট ১৩টি প্রবেশপথের প্রতিটিতে মুসল্লিদের জটলা। কেউ বাস, কেউ ট্রাক, কেউবা পিকআপ ভ্যানে চড়ে আসছেন ইজতেমা মাঠে। মাঠে ঢুকেই নিজ নিজ খিত্তায় (এলাকাভিত্তিক নির্ধারিত জায়গা) অবস্থান নিচ্ছেন তারা।
ইজতেমার এ আয়োজনের মিডিয়া সমন্বয়ক মো. সায়েম বলেন, “অধিকাংশ মুসল্লি চলে আসায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আমাদের বয়ান শুরু হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ইজতেমা শুরু হবে শুক্রবার বাদ ফজর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে।”
মাওলানা সাদ আসার ব্যাপারে আলোচনা চলছে
এদিকে ইজতেমায় মাওলানা সাদ কান্ধলভীর আসার ব্যাপারে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। বৃহস্পতিবার ইজতেমা মাঠ পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এক কথা জানান তিনি। ফরিদুল হক খান বলেন, “মাওলানা সাদকে আনার জন্য তার পক্ষের লোকজন কাজ করছেন। সরকারের সঙ্গেও তাদের কথা চলছে। সমঝোতার মধ্যে হয়তো তাকে আনা সম্ভব হতে পারে।”
পাঁচ মুসল্লির মৃত্যু
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ইজতেমায় আসা পাঁচ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজতেমার আয়োজকেরা। তাদের মধ্যে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনজনের নাম–পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন শেরপুর সদরের মো. আবুল কালাম (৬৫), নেত্রকোনার কেন্দুয়ার আবদুল হেলিম মিয়া (৬৫) ও দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের মো. জহির উদ্দিন (৭০)। তিনজনই বার্ধক্যের কারণে মারা গেছেন বলে জানান মো. সায়েম।