জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, “জুলাই-আগস্টে হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার করা অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় দায়। যদি তারা এটি করতে না পারে তাহলে এটাই তাদের সীমাবদ্ধতা এবং ব্যর্থতার সবচেয়ে বড় প্যারামিটার হবে।”
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ পরিবারের হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন তিনি।
সারজিস বলেন, “এই হত্যার বিচার করা, খুনী হাসিনার বিচার করা, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের যে সন্ত্রাসীরা এই হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে সরাসরি জড়িত, যারা অবৈধ অস্ত্র নিয়ে, খুনী হাসিনার সাপ্লাই করা অস্ত্র দিয়ে আমার ভাই-বোনদের হত্যা করেছে, তাদের বিচার করা এই অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় দায়। আমরা অন্তবর্তী সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, যদি আপনাদের দায়িত্ব থেকে বিন্দুমাত্র গড়িমসি করেন এই বাংলাদেশে আপনাদের মুখ দেখানোর আর কোনো জায়গা থাকবে না।”
সারজিস আরও বলেন, “আমাদের শহীদ পরিবার, আহত যোদ্ধা এবং আগামীর প্রজন্ম- আপনাদের শুধু একটি জিনিস অনুরোধ করতে চাই, আমরা দলকানা হবো না, কোনো গোষ্ঠীর পূজা করব না। আমরা কাউকে ছেড়ে কথা বলবো না।”
ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, “বিভিন্ন মহলের প্রোপাগান্ডার সেলগুলো বক্তব্যের খণ্ডাংশ নিয়ে কোনো ঘটনাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে নোংরা রাজনীতি করার চেষ্টা করছে কি না আমাদের এটাও খেয়াল করতে হবে। এই অভ্যুত্থানের সাথে সম্পর্কিত মানুষগুলোকে বিভিন্নভাবে গুজবের মাধ্যমে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে কি না এই জিনিসগুলো পর্যবেক্ষন করার মানসিকতা আমাদের মধ্যে রাখতে হবে।”
শহীদ পরিবারগুলোকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “এটা শুধুমাত্র শুরু, অল্পকিছু টাকা দিয়ে মানুষ হারানোর অভাব পূরণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা কথা দিতে চাই, এই জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন যতদিন থাকবে এবং আপনারা যতদিন থাকবেন আপনাদের জন্য জীবনের বিনিময়েও কাজ করে যাবো।”
শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগের ৫৮ জনকে এই আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম, আশশেফা খাতুন, পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন, খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় নেতা মো. ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ।