• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাবেক এমপির বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা, জানেন না বাদী


দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৪, ০৭:৫৬ এএম
সাবেক এমপির বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা, জানেন না বাদী

দিনাজপুরের কাহারোল থানায় ডাকাতির অভিযোগে দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপালসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। 

তবে বাদী মামলার ব্যাপারে তেমন কিছুই জানেন না। ‘সিনিয়ররা’ মামলাটি করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। যদিও মামলার বাদীর জায়গায় তার নাম ও স্বাক্ষর রয়েছে। পুলিশ বলছে, মামলাটি মিথ্যা। মামলা না নিলে থানায় হামলা করা হবে, এমন হুমকি পেয়ে তারা মামলা নিতে বাধ্য হয়। তবে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা পুলিশের করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

মামলায় মনোরঞ্জন শীল ছাড়াও উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম ফারুক, উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন, সুন্দরপুর ইউপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, সুন্দরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিদুল ইসলাম, মুকুন্দপুর ইউপির চেয়ারম্যান জাহিদুজ্জামান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. মশিউর প্রমুখ। 

সূত্র জানায়, সুন্দরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মতিয়ার রহমান মামলাটি করিয়েছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বলা হয়, গত ৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টায় কয়েকজন বন্ধুসহ কাহারোল বাজার থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন বাদী সাব্বির ইসলাম। এ সময় তেলেঙ্গী বাজার এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপালসহ অন্য আসামিরা তাদের গতি রোধ করে মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এ সময় তাঁদের (বাদী ও তাঁর বন্ধু) দেশি অস্ত্র দিয়ে জখম করার পাশাপাশি আগুন দিয়ে মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ডাকাতির অভিযোগে মামলা করা হয়।

মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে বাদী সাব্বির ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, “মামলার বিষয়ে আমি বলতে পারব না। আমাদের সিনিয়ররা মামলাটি করেছেন।”

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ আগস্ট রাতে কাহারোলে মধ্যরাতে ডাকাতি করার অভিযোগে স্থানীয় লোকজনের হাতে তিনজন আটক হন। পরে তাঁদের সেনাসদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই তিনজনের একজন মামলার বাদী সাব্বির ইসলাম। পরদিন দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সাব্বিরকে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ থেকে বহিষ্কার করেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউর রহমান। যদিও ১২ ঘণ্টার মধ্যে সাব্বিরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা উল্লেখ করে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান রেজাউর রহমান।

মামলার বাদী মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না—জানতে চাইলে কাহারোল থানার তদন্ত কর্মকর্তা বাবলু কুমার রায় মুঠোফোনে বলেন, “মামলাটা তো ভাই পুরা মিথ্যা। হানড্রেডে হানড্রেড মিথ্যা। কিন্তু ওরা (কাহারোলের সুন্দরপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা মতিয়ার রহমান) বলতেছে, যদি আপনারা মামলা না নেন, তাহলে আমরা ৪০০ থেকে ৫০০ লোক এসে থানা ঘেরাও করব। যা পারব, তা–ই করব। তার হুমকি, লাফালাফি দেখে আমরা কী করব বলেন।”

এ বিষয়ে সুন্দরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মতিয়ার রহমান বলেন, “মামলার বিষয়ে কিছুটা জানি।” 

মামলা নিতে থানায় হুমকি দিয়েছেন কি না, জানতে চাইলে বলেন, “কেন হুমকি দিতে যাব, প্রেশার দিতে যাব? ঘটনা সত্য, গাড়ি পুড়ায় দিয়েছে। ওদের মাইরধর করছে। যারা বলছে হুমকি দিয়েছি, তাদের জিজ্ঞেস করেন।” 

মামলার বাদী কিছুই জানেন না উল্লেখ করলে বলেন, “এ ব্যাপারে সাব্বিরকেই জিজ্ঞেস করেন।”

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!