কুষ্টিয়ার খোকসা থানার মোটরসাইকেল চালক হত্যা ও ছিনতাইয়ের দায়ে ফজলু ও মজিবর সেখ নামের দুজনকে আমৃত্যু এবং খুশি বেগম ওরফে ফলসী নামের এক নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালহত।
রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১ এর বিচারক তাজুল ইসলাম জনাকীর্ণ আদালতে আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামির অনুপস্থিতি এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নারী আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় দেন।
রায়ে প্রত্যেককে পৃথকভাবে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে ফজলু (৪৪) ও রাজবাড়ি জেলার বেলগাছী গ্রামের বাসিন্দা মো. মজিবর সেখ (৩৬) আমৃত্যু এবং খোকসা উপজেলার উত্তর শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা মজনু সেখের স্ত্রী খুশি বেগম (৫৪)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টায় রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার বাসিন্দা সজিবদ্দিন সেখের ছেলে ভাড়াটিয়া মটরসাইকেল চালক নজরুল ইসলাম ওরফে লতিফ (৩০) অন্যান্য দিনের মতো বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি।
এই ঘটনার পরদিন ১৭ জুলাই দুপুরে খোকসা উপজেলার উত্তরশ্যামপুর গ্রামের একটি পাটক্ষেত থেকে বিবস্ত্র ও মস্তকবিহীন দেহ উদ্ধার করে খোকসা থানা পুলিশ। পরে নিহতের পরিবারের লোকজন নিহতের শরীরে উল্লেখযোগ্য কিছু চিহ্ন ধরে লাশটি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক নজরুল ইসলাম লতিফের বলে শনাক্ত করে।
পরিকল্পিতভাবে মোটরসাইকেল ছিনতাইসহ নজরুল ইসলাম লতিফকে হত্যা করে লাশ গুম চেষ্টার অভিযোগ এনে নিহতের বড় ভাই বিল্লাল সেখ বাদি হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ মামলা দায়ের করেন খোকসা থানায়।
মামলার তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৩০ জুন এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন খোকসা থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক জহিরুল হক।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেড অনুপ কুমার নন্দী জানান, অপহরণ মোটরসাইকেল ছিনতাই, হত্যা ও লাশ গুম চেষ্টায় জড়িত বলে আনীত অভিযোগ স্বাক্ষ্য শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানি শেষে এক নারীসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সন্দেহাতীত প্রমাণিত হয়। তাই দুইজনের আমৃত্যু এবং খুশি বেগম নামে এক নারীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডসহ প্রত্যেকের পৃথকভাবে ২০ হাজার টাকা করে অর্থ দণ্ডাদেশ অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।