টাঙ্গুয়ার হাওর, বারেকটিলা, শিমুল বাগানসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটসমৃদ্ধ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসছেন এই এলাকায়। কিন্তু সেই তুলনায় উপজেলার সড়কগুলোর তেমন কোনো উন্নয়ন করা হয়নি। অথচ এই উপজেলা থেকে প্রতি বছর সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সীমান্ত এলাকার বারেকটিলা থেকে মধ্যনগড় উপজেলার মহেষখলা পর্যন্ত প্রায় ১০কিলোমিটার সড়ক স্বাধীনতার পর থেকে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তা কাদায় ভরে যায়। কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ফলে পর্যটকসহ উপজেলার ২০ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বারেকটিলা থেকে মধ্যনগর উপজেলার মহেষখোলা পর্যন্ত প্রায় ১০কিলোমিটার সড়কজুড়ে গর্ত ও খানা-খন্দে ভরা। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে থাকায় বর্তমানে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তবুও বাধ্য হয়েই সুনামগঞ্জ, মধ্যনগড়, নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের বাসিন্দাদের এই সড়টি ব্যবহার করতে হচ্ছে।
ফরিদ, আমিনুল মিয়াসহ সীমান্ত এলাকার স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, “আমরা সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা যুগ যুগ ধরে চরম দুর্ভোগের মধ্যে জীবন পাড় করছি। এছাড়া এই উপজেলাটিকে উন্নয়নবঞ্চিত করা হলেও সমগ্র দেশে উন্নয়নের সুবাতাস বইছে। দেশের বিভিন্ন জেলার সড়ক ও অবকাঠামোর উন্নয়ন হচ্ছে শুধু বারেকটিলা-মহেষখলা, তাহিরপুর-সুলেমানপুর সড়ক, তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক চলাচলের অনুপযোগী রয়ে গেছে।”
ঢাকা থেকে আসা শাকিল আহমেদ নামের এক পর্যটক বলেন, “মোটরসাইকেল বা অটোরিকশা নিয়ে বারেকটিলার ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। কারণ সরু সড়কটিতে গর্ত আর ভাঙার সংখ্যা বেশি। আর যাতায়াত করতে গিয়ে খরচ গুনতে হয় দ্বিগুণ।”
বিজিবি সুনামগঞ্জ-২৮ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তসলিম এহসান জানান, এই সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সড়কটি মেরামত ও প্রসস্থ করলে এর সুফল পাবে সর্বস্তরের মানুষ।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, “জনদুর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব যাতে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।”
এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ উল্লাহ খান জানান, রাস্তাটির টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়ন বারেকটিলা থেকে মধ্যনগর উপজেলা পর্যন্ত সীমান্ত রাস্তাটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২০০ কোটি টাকা।