ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ও সাতৈর ইউনিয়নের পাশাপাশি একটি গ্রামীণ সড়ক রয়েছে। পঞ্চাশ বছরের পুরোনো এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন আশপাশের ৫-৭ গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। তবে একটু বৃষ্টি হলেই বিপাকে পড়েন এলাকাবাসী।
পাটিতাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সত্তার মাতুব্বর বলেন, “জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। হাঁটুসমান কাদা হয়। তাই আমাদের দাবী এ গ্রামীণ কাঁচা সড়কটি পাকা বা ইটের সলিং করে দিলে গ্রামবাসী উপকৃত হবে।”
স্থানীয় রহিম মিয়া বলেন, “বর্ষকালে মাটির এ রাস্তায় জুতা পায়ে, কাপড় পরে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। এলাকার লোকজন বা গর্ভবতী মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয় না।”
কলেজ পড়ুয়া রিফাত হোসেন বলেন, “এ রাস্তা দিয়ে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। এমনকি কেউ অসুস্থ হলে বা মারা গেলে এই রাস্তা দিয়েই নেওয়া লাগে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই দেখছি এ রাস্তার বেহাল দশা। জেলার সব জায়গায় উন্নয়ন হলেও এই সড়কটি নিয়ে কারও কোনো চিন্তা নেই।”
জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি ঘোষপুর ইউনিয়নের অংশ সাতৈর বাজার গোরস্থানের মাঝকান্দি ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে বাকু মেম্বারের বাড়ির জামে মসজিদের সামনে চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ হয়েছে। সেখান থেকে বোতনের মাঠ হয়ে পাটিতাপাড়া ঈদগাঁহ পর্যন্ত সাতৈর ইউনিয়নের অংশ। মূলত এই দুই ইউনিয়নের লোকজনই এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন।
এ ব্যাপারে ঘোষপুর ইউপি সদস্য মো. জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা ছিল গ্রাম হবে শহর। তবে অনেক এলাকার চিত্র পরিবর্তন হয়ে শহরে পরিণত হয়েছে। অথচ ঘোষপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ও সাতৈর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৫০ বছরের গ্রামীণ একটি সড়কে ইটের ছোঁয়া লাগেনি। বৃষ্টি হলে এ রাস্তায় হাটু পর্যন্ত গেড়ে যায়। সড়কটি যাতায়াতের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়ে।”
সাতৈর ইউপি সদস্য সৈয়দ শফিকুল আজম মাকুল বলেন, বোতনের মাঠের অধিকাংশ ফসল কৃষকরা এ রাস্তা দিয়ে আনা নেওয়া করে থাকে। এ এলাকাটি কৃষি সমৃদ্ধের ওপর নির্ভর। বৃষ্টিতে রাস্তায় কাদা হলে কৃষকরা ধান পাট বা অন্য ফসল বিক্রি করতে হাট-বাজারে নিতে পারেন না। তাই সংশ্লিষ্টদের কাছে আমার আকুল আবেদন এ রাস্তাটি যেন দ্রুত ইটের সলিং বা পাকা করা হয়।”
ঘোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইমরান হোসেন নবাব মিঞা বলেন, “আমি গোরস্থান থেকে ইউনুস শেখের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৯ মিটার কাঁচা গ্রামীণ সড়কে ইটের সলিংয়ের কাজ করেছি। বাকি আছে বাকু মেম্বারের বাড়ি সংলগ্ন মসজিদ পর্যন্ত। যেহেতু সেখান দিয়ে একাধিক গ্রামের লোকজন চলাফেরা করে। আমরা আগামীতে কোনো বরাদ্দ পেলে বাকি অংশে ইটের সলিং করে দেব।”
সাতৈর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাফিউল আলম বলেন, “আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখব। সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ হলে বা জনদুর্ভোগের কারণ হলে ইটের সলিং করে দেওয়া হবে।”