ফরিদপুরের সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে আব্দুল খালেক নামের ৬০ বছর বয়সী এক অসুস্থ বৃদ্ধকে ফেলে রেখে গেছেন স্বজনরা।
মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
আব্দুল খালেক সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ভাওয়াল গ্রামের মৃত মজিদ মাতুব্বরের ছেলে। তিনি চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে খালেক সবার বড়। তার দুই ছেলে সন্তানও রয়েছে।
বৃদ্ধ আব্দুল খালেক বলেন, “আমার পরপর দুই স্ত্রী মারা যায়। দ্বিতীয় স্ত্রীর মারা যাওয়ার ১৪ বছর আগে প্যারালাইসিস হয়ে আমার এক সাইড অবশ হয়ে যায়। এরপর বসতভিটা যা ছিল তা বিক্রি করে চিকিৎসা করি। এখন আমার কোনো কিছুই নেই। আমার দুটি ছেলে আছে। তারা বিয়ে করে রাজবাড়ী তাদের শ্বশুরবাড়িতে থাকে। আমার কোনো খোঁজ-খবর রাখে না।”
আব্দুল খালেক আরও বলেন, “আমার ভাই-বোনেরা সবাই আর্থিকভাবে ভালো আছে। তবে তারাও আমার দেখাশোনা করে না। এমন অবস্থায় আমি পাশের আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নিই। সেখানে দুই বছর থাকার পর শ্বশুর বাড়ির লোকজন বৃহস্পতিবার আমাকে আর রাখবে বলে এখানে ফেলে রেখে যায়।”
আব্দুল খালেকের দুই ছেলের নাম আলমগীর মাতুব্বর (৪০) ও কলম মাতুব্বর (৩৫)। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আব্দুল খালেকের শ্বশুরবাড়ির জোসনা বেগম নামের এক নারী বলেন, “আব্দুল খালেকের ছেলেদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম, তারা কেউ ওনার দায়িত্ব নিতে চায় না। ওনার ভাই-বোন সবার বাড়িতেই বিল্ডিং ও জমিজমা আছে। তারাও তার খোঁজখবর নেয় না।”
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, “গত বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় আমার অফিসের সামনে একজন বৃদ্ধ লোককে তার স্বজনরা ফেলে রেখে যায়। এরপর চার দিন পেরিয়ে গেলেও কেউ কোনো খোঁজ নিতে আসেননি। পরে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি, তার ছেলেরা শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করেন। তিনি তার বসতবাড়ি বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। তবে এখন শ্বশুরবাড়ির লোকজনও তার ব্যয়ভার নিতে নারাজ। তাই শ্বশুরবাড়ির স্বজনরা এখানে ফেলে রেখে গেছেন। পরে সোমবার (৩ জুন) প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের যোগাযোগ করে তাদের যে বৃদ্ধানিবাস আছে, সেখানে তার থাকার ব্যবস্থা করি।”