বাকপ্রতিবন্ধী শিশুটির বয়স ১২ বছর। তার বাবা নেই; মা ভিক্ষা করে সংসার চালান। মাসে ১০ হাজার টাকা বেতনে গৃহকর্মীর কাজ দেওয়ার কথা বলে সেই শিশুটিকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলেন দুই নারী। তারা শিশুটিকে এক ব্যক্তির হাতে তুলে দেন। সেখানে শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়। অসুস্থ হয়ে পড়লে আবার তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন ওই দুই নারী।
ধর্ষণের শিকার শিশুটির বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলায়।
এ ঘটনায় দেবীদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে। পুলিশ ওই দুই নারীর মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে মামলার প্রধান আসামির নাম–পরিচয় জানা যায়নি।
এমন পরিস্থিতিতে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে দেবীদ্বারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরে এলাকাবাসী এ কর্মসূচি পালন করেন।
তিন দিনের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহার ও নির্যাতনের শিকার শিশুর পরিবারের সদস্যরা জানান, ১৮ সেপ্টেম্বর ওই শিশুকে মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতনে গৃহকর্মীর কাজ দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে যায় দুই নারী। তারা রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় একটি বাসায় ওই শিশুকে নিয়ে ওঠেন। সেখানে শিশুটিকে একটি কক্ষে তিন দিন আটকে ধর্ষণ করেন এক ব্যক্তি। ওই দুই নারীও সেই বাসায় ছিলেন। অসুস্থ হয়ে পড়লে ২১ সেপ্টেম্বর শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তারা। বাড়িতে আসার পর শিশুটি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে পরিবারের সদস্যদের কাছে ধর্ষণের ঘটনা জানায় শিশুটি।
এ ঘটনায় স্থানীয় দুই নারী সংগঠকের সহায়তায় ২৪ সেপ্টেম্বর শিশুটির খালা বাদী হয়ে দেবীদ্বার থানায় ওই দুই নারী ও এক ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। ওই দিনই পুলিশ অভিযান চালিয়ে এক নারীকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দেবীদ্বার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুক্তার আহমেদ বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এক নারী দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে এক দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। আদালতের জিআরওর কক্ষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন বিচারক। শিগগিরই ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মামলায় ধর্ষকের নাম–পরিচয় নেই। পলাতক অপর নারী দালালকে ধরার চেষ্টা করছি। তাকে পেলেই ধর্ষকের ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যাবে।”