টানা বর্ষন ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পটুয়াখালীর উপকূলীয় মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলার অভ্যন্তরীনরুটসহ সকল রুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে জেলার নিম্নাঞ্চলের শতাধিক চর। এছাড়া কুয়াকাটাও পর্যটকশূন্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
পটুয়াখালীর আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী জানান, “এ বৃষ্টি আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় মেঘের গর্জন বাড়তে পারে এবং ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পায়রা বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।“
এদিকে টানা বৃষ্টির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। বিভিন্ন স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। তলিয়ে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর।
সদর উপজেলার আউলিয়াপুর এলাকার মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান জানান, টানা বর্ষনে স্থানে পানি উঠেছে। এছাড়া অনেক কৃষি জমিও তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি নামানোর ব্যবস্থা করা না গেলে অনেক বীজতলা পচে যাবে। কৃষকরা চরম সংকটে পড়বে বলে জানান তিনি।
পৌর শহরের ভ্যানচালক আফাজ মিয়া বলেন, শুক্রবার (৪ আগস্ট) থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। তাই বাজারে মানুষের আনাগোনা কম। এ কারণে আমাদের আয়ও প্রায় বন্ধ। ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুব সমস্যায় আছি।”
টিয়াখালী ইউনিয়নের বাদুরতলী এলাকার জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, “টানা বৃষ্টিতে আমার পুকুরসহ অনেকের মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এতে মাছচাষিরা লোকসানে পড়তে পারেন।”
আলীপুর মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি আনসার মোল্লা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল থাকায় শত শত মাছধরা ট্রলার শিববাড়িয়া খালে আশ্রয় নিয়েছে। জেলেরা সাগরে যেতে পারছেন না।”
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে কুয়াকাটা অনেকটা পর্যটকশূন্য। ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করছেন।
পটুয়াখালী বিআইডব্লিউটিএ’র উপপরিচালক মো. মামুন বলেন, “অভ্যন্তরীন রুটসহ সকল রুটে সবধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আবহাওয়া ভালো হলে স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল করা হবে।”