ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নওগাঁর জনজীবন। শহরের তুলনায় লোডশেডিং বেশি হচ্ছে গ্রামে। শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি না থাকায় এমনিতেই বেশ গরম অনুভূত হচ্ছে। তার ওপর লোডশেডিং বাড়তি ভোগান্তির সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) দাবি করছে, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু দিনে প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। অপর দিকে পল্লী বিদ্যুতের আওতায় বিশেষ করে গ্রামের দিকে বিদ্যুৎ থাকছে না। ফলে কৃষিকাজে সেচ পাম্পে ঠিকমতো বিদ্যুৎ পাচ্ছে না।
মেসার্স রহিমা চালকলের মালিক শেখ আমজাদ হোসেন বলেন, দিনে তিন থেকে চার ঘণ্টা বিদ্যুৎবিভ্রাট হচ্ছে। সারা দিন বিদ্যুৎ থাকলে প্রায় ১২ টন করে চাল উৎপাদন করা হয়। কিন্তু বিদ্যুৎবিভ্রাট হওয়ায় দিনে ৫ থেকে ৬ টনের মদো চাল উৎপাদন হচ্ছে। এতে করে শ্রমিক খরচ বেড়ে চাল উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে।
নিয়ামতপুর উপজেলার ছাতমা গ্রামের জরিমবক্স বলেন, এ সময় (আষাঢ় ও শ্রাবণ) বৃষ্টির মাস। এ মাসে বৃষ্টি না হওয়ায় আমন ক্ষেতে সেচ দিয়ে পানি দিতে হয়। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা ও সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে সেচ কাজে ব্যাপক বিঘ্ন হচ্ছে।
নওগাঁ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আবাসিক প্রকৌশলী রুহুল করিম বলেন, নওগাঁ জেলায় পিডিবির বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি নেই। যেটুকু সমস্যা হয় সেটা যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে। পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং আছে। জেলায় পিডিবির বিদ্যুৎ চাহিদা ২৫ মেগাওয়াট এবং গ্রিড থেকে চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।
নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রিজিয়ন-১-এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) এনামুল হক বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ রিজিয়ন-১-এর (নওগাঁ সদর, আত্রাই, রানীনগর, মান্দা, নিয়ামতপুর ও বদলগাছী উপজেলা) সর্বমোট বিদ্যুতের চাহিদা ৭৫ মেগাওয়াট। গ্রিড থেকে পাওয়া যায় ৪৫ মেগাওয়াট। আর বাকি ৩০ মেগাওয়াট বিভিন্নভাবে লোডশেডিং করে সমন্বয় করা হয়। গ্রিড থেকে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ পাওয়া গেলে কোনো লোডশেডিং হবে না।
নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রিজিয়ন-২-এর (পত্নীতলা) ডিজিএম ফকরুল আলম বলেন, পত্নীতলায়-২-এ (পত্নীতলা, মহাদেবপুর, ধামইরহাট, সাপাহার ও পোরশা উপজেলায়) সর্বমোট বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ মেগাওয়াট। গ্রিড থেকে পাওয়া যায় ১১ মেগাওয়াট। বাকি ৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লোডশেডিং করে চালানো হয়।