• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করে দুর্ভোগের প্রতিবাদ


শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২৪, ০১:৪৯ পিএম
রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করে দুর্ভোগের প্রতিবাদ
রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করেন গ্রামবাসী। ছবি : প্রতিনিধি

সামান্য বৃষ্টি হলেই কাঁচা রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে।  ১৫ গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুলের শিক্ষার্থীদের পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে গিয়ে পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটির দেড় কিলোমিটার অংশজুড়ে এমন করুণ অবস্থা হলেও পাকাকরণের কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্টদের। তাই তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যে চলাচলের ওই রাস্তাটিতে গ্রামবাসী ও পথচারীরা ধানের চারা রোপণ করে
প্রতিবাদ জানিয়েছে।

শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের মোহর আলী হাজী কান্দি গ্রামের বাসিন্দারা এমন প্রতিবাদ করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কদম আলী মোড়ল কান্দি থেকে মোহর আলী হাজী কান্দি গ্রাম পর্যন্ত মাটির তৈরি কাঁচা রাস্তা দিয়ে আশেপাশের ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের বাসিন্দারা চলাচল করে। প্রত্যেক বছর বর্ষা মৌসুম এলেই কাদা জমে এসব গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। গ্রামবাসী বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও রাস্তাটি পাকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

এ ছাড়া এবছর পার্শ্ববর্তী শুক্কুর হাওলাদার কান্দি গ্রামের একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে মাহিন্দ্র ট্রাক চলাচল করায় রাস্তাটি ব্যবহারের জন্য একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে প্রায় ১৫ টি গ্রামের ৩০ হাজার বাসিন্দা ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। এমন ভোগান্তির প্রতিবাদ স্বরূপ রাস্তাটিতে ধানের চারা রোপণ করেছে গ্রামবাসী ও পথচারীরা।

শাহজাহান মাদবর নামে একজন বলেন, “রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে বারবার জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা বিষয়টির গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তাটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গ্রামের শিক্ষার্থী ও রোগীরা পড়েন চরম বিপাকে। অন্যদিকে এমন রাস্তা দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে মাহিন্দ্র ট্রাকযোগে ভারী মালামাল নেওয়া-আনা করা হয়েছে। এখন আর রাস্তাটি ব্যবহারের উপযোগী নেই, তাই আমরা গ্রামবাসী মিলে রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করেছি।”

মোহর আলী হাজী কান্দি গ্রামের বাসিন্দা রাশিদা বেগম নামের এক গৃহিণী বলেন, “এক মাসের বাচ্চা নিয়ে টিকা দেওয়ার জন্য বের হয়েছিলাম। বাচ্চাকে নিয়ে বাড়ির সামনের রাস্তায় আসার পরেই কাদায় পড়ে গিয়ে দুই জনেই ব্যথা পেয়েছি।”

পূর্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লামিয়া, হাসিফা ও সোহাগী আক্তার শোভার সঙ্গে কথা হয় সংবাদ প্রকাশের। তারা বলেন, “প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসা করতে কষ্ট হয়। জুতা খুলে হাতে নিয়ে এ রাস্তায় চলাচল করতে হয়। এতে কাদা লেগে জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। বই-খাতা কাদায় পড়ে গেলে আর স্কুলে যেতে পারি না। রাস্তাটি পাকা হলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হতো।”

বিষয়টি নিয়ে পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাফ খান বলেন, “রাস্তাটি এমন বেহাল হয়েছে সে বিষয়ে আমকে কেউ কিছু বলেনি। তবে রাস্তাটির সামনেই একটি কালভার্টের কাজ চলছে। সেখানে ট্রাক্টর দিয়ে মালামাল নেওয়ায় হয়তো রাস্তাটির অবস্থা একটু বেশি বেহাল হয়েছে। কিন্তু রাস্তায় ধান লাগানোর বিষয়ে আমি জানি না।”

এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এ বিষয়ে স্থানীয় কেউ বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আমাকে জানায়নি। বিষয়টির খোঁজ নিয়ে দেখব।”

Link copied!