প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে অন্তর্ভূক্ত করে বেতন-ভাতা প্রদানের দাবিতে রংপুরের পীরগাছায় মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষক ওই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সহকারী শিক্ষক নাছিমা বেগম, আকরাম হোসেন, শিরিনা আক্তার, শ্রাবন্তী রায়, জিল্লুর রহমান, কানিজ ফাতেমা, শফিকুল ইসলাম, আহসান হাবিব, আব্দুল মজিদ, রবিউল আউয়াল, আব্দুর রউফ, হারুন অর রশিদসহ অনেকে।
শিক্ষকরা তাদের বক্তব্যে বলেন, “শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড আর শিক্ষার ভিত্তি হলো প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষকরা শিক্ষার সূতিকাগারের কান্ডারি। দেশ উন্নয়নশীল কাতারে, মাথাপিছু আয় ২৭৯৩ মার্কিন ডলার। ভীনদেশী ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে। নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী ট্যানেল এখন দৃশ্যমান। দেশ আর্থিকভাবে সক্ষমতা অর্জন করেছে।”
শিক্ষকরা আরও বলেন, “আমরা নোবেল বিজয়ী বীরের জাতি। আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস এখন রাষ্ট্র ক্ষমতায়। বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাম্য গড়ার প্রত্যয়ে উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধ এবং সমতার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈষম্যহীন সমতার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সারথী হিসেবে আমরা প্রাথমিক শিক্ষকরা সমতার স্মার্ট নাগরিক গড়ার প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে বদ্ধ পরিকর। প্রাথমিক শিক্ষকদের দৃঢ় বিশ্বাস নোবেল বিজয়ী বৈষম্যবিরোধী প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষকদের কখনো হতাশ করবেন না।“
তারা আরও বলেন, “পড়াশোনা শেষ করে মহৎ পেশায় নতুন নিয়োগ পাওয়া একজন সহকারী শিক্ষক ১৩তম গ্রেডে মাত্র ১১,০০০ টাকা বেতন গ্রেডে মোট ১৭,৬৫০ টাকা পেয়ে থাকেন। মাসিক এ বেতনে সংকুলান না হয়ে অনেক ক্ষেত্রে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে হতাশা ও কষ্ট নিয়ে জীবন অতিবাহিত করেন শিক্ষকরা। মাসিক এ বেতন-ভাতা দিয়ে কখনো উন্নত জীবন মান সম্ভব নয়। আর এই কারণেই মেধাবীরা প্রাথমিকে শিক্ষকতা পেশায় না এসে অন্য পেশায় ছুটছেন।”
শিক্ষকরা বলেন, “স্বাধীনতার পর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক এবং গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের বেতন স্কেল একই ছিল। ১৯৭৭ সালে প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ৩২৫ টাকা, সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ৩০০ টাকা নির্ধারণ করে সর্বপ্রথম প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি করা হয়। আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা পূর্বের ন্যায় (প্রধান শিক্ষকদের কার্যভার ভাতা প্রদান করে) প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের একই বেতন গ্রেডের যৌক্তিক দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।”