ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে প্রতিবছর ঈদে ঘরমুখো মানুষকে যানজটের কবলে পড়তে হয়। সড়কে যানবাহনের চাপ, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা ও গাড়ি পার্কিংয়ের ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তবে এবার ঈদযাত্রা স্বস্তির করতে বিভিন্ন প্রস্তুতি নিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ।
জানা যায়, বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ত এই মহাসড়ক দিয়ে দৈনিক গড়ে ২০ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে থাকে। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এর ফলে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। তবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলে যানজটের কবল থেকে রেহাই পেতে পারে যাত্রীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের কোথাও কোনো সংস্কার কাজ চলমান নেই। তবে বিভিন্ন পয়েন্টে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও রাস্তা বন্ধ রেখে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সেইসঙ্গে মহাসড়কের পাশে প্রচুর অবৈধ স্থাপনা থাকায় যানবাহন চলাচলে বাধার সম্মুখীন হতে হয়।
মির্জা নাসের, জামাল হোসনসহ কয়েকজন যাত্রী জানান, বিভিন্ন বাজারে মহাসড়কের মাঝে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করা হয়। এছাড়াও তিন চাকার যানবাহন চলাচলের কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এসব বিষয়ে হাইওয়ে পলিশ তদারকি না বাড়ালে ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগে পড়তে হবে।
গৌরিপুর বাজারের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার অবৈধ যানবাহনের দখলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গৌরিপুর এলাকা। এতে মহাসড়কে চলাচলরত দূরপাল্লার যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসসহ জরুরি সেবার যানবাহনগুলোকে যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে। এ জন্য যাত্রীদেরও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এব্যাপারে ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, “সুয়াগাজী, পদুয়ার বাজার, ক্যান্টনমেন্ট ও নিমসার আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। সেখানে অবৈধ পার্কিং সরাতে আমরা কাজ করছি। এছাড়া নিয়মিত ডিউটির সঙ্গে টহলও বাড়ানো হচ্ছে। আশা করি সবার সহযোগিতা পেলে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের কোনো সমস্যা হবে না।”
হাইওয়ে পুলিশ সুপার (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. খাইরুল আলম জানান, ঈদযাত্রা নিরাপদ ও স্বস্তির করতে আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি। ইতোমধ্যে যানবাহনের মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করেছি। তাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছি। রিজিয়নের ২২টি থানা-ফাঁড়ি এলাকায় ৬৪টি পেট্রোল টিম থাকবে। পাশাপাশি জরুরি সেবায় থাকবে ৩০টি কুইক রেসপন্স টিম। যেকোনো দুর্ঘটনা বা প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ২২টি সরকারি ও ১২টি বেসরকারি রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত সংখ্যক অ্যাম্বুলেন্স থাকছে দুর্ঘটনায় হতাহতের সেবার জন্য।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে যানবাহন না থামানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, “এতে নির্বিঘ্নে যান চলাচল করতে পারবে। একাধিক গোয়েন্দা টিম কাজ করবে। একটি পূর্ণাঙ্গ কন্ট্রোলরুম থাকছে হাইওয়ে পুলিশ সুপারের অধীনে। পাশাপাশি থাকছে ২২টি সাব-কন্ট্রোলরুম। ৮২১ কিলোমিটার জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়কে কোথাও কোনো সংগঠন কিংবা চক্র চাঁদাবাজি করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি এবার ঈদে বিশেষ হাইওয়ে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ১০০ প্রশিক্ষিত সদস্য মাঠে থাকবে বলেও জানান পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।