• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৭ মার্চ, ২০২৫, ২১ ফাল্গুন ১৪৩০, ৫ রমজান ১৪৪৫

কচুরিপানা কাটার মেশিন বানিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন প্রদীপ


যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৫, ০৩:৫৬ পিএম
কচুরিপানা কাটার মেশিন বানিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন প্রদীপ

সম্প্রতি কচুরিপানা কাটার মেশিন বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বেশ ভাইরাল হয়েছেন যশোরের মণিরামপুরের প্রদীপ বিশ্বাস।

প্রদীপ উপজেলার সীমান্তবর্তী কুচলিয়া গ্রামের মৃত প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। তার বাবা প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাস অভয়নগর উপজেলার একটি জুট মিলের নামকরা মেকানিক ছিলেন। তার মেধার কারণে তিনি এলাকায় ‘পন্ডিত’ নামে পরিচিত ছিলেন। বাবার হাত ধরেই মেকানিকের পেশায় প্রবেশ করেন প্রদীপ। সুন্দলী বাজারে তার নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ারিং কর্মশালা রয়েছে। পড়াশোনায় তিনি সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন এবং সেখান থেকেই মেকানিকের কাজে আগ্রহী হন।

জানা গেছে, জলাবদ্ধ ভবদহ অঞ্চলের কচুরিপানা সমস্যার সমাধান খুঁজতে গিয়েই যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেন প্রদীপ।

এরইমধ্যে প্রদীপের তৈরি মেশিন গোপালগঞ্জ পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) কিনে নিয়েছে। এছাড়া দেশের নানা প্রান্ত থেকে যোগাযোগ করে মেশিন ভাড়া, ক্রয় ও তৈরির অর্ডার পাচ্ছেন তিনি।

মেশিনের উদ্ভাবক প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, নাব্যতা হারিয়ে এ অঞ্চলের খাল-বিল ও নদীতে প্রচুর শেওলা (কচুরিপানা) জন্মেছে। যা সারা বছরই থাকে। এতে করে খাল-বিল ও নদীতে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। মূলত এই শেওলা থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করার চিন্তা থেকে তিনি মেশিন আবিষ্কারে নেমে পড়েন।

তিনি জানান, দুই বছর আগে ২২ হর্স-পাওয়ারের ইঞ্জিন, অ্যাঙ্গেল, পাত, কাঠ, চেইন, পেনিয়াম, গিয়ারবক্স, প্লেনসিড ও ১৯টি বিচালি কাটা ছুরি দিয়ে মেশিন বানালেও ঘন শেওলা কাটতে গেলেই মেশিন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ডিঙি নৌকা চালাতে ১১ হর্স-পাওয়ার ও শেওলা কাটতে ২২ হর্স-পাওয়ারের পৃথক দুইটি ইঞ্জিনসহ ৯টি ছুরি পাতের মধ্যে বিশেষ কায়দায় সেট করে মেশিনটি বানানো হয়। প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয় করে মাস খানেক কাজ করে তৈরিকৃত মেশিন শেওলা কাটার উপযোগী হয়।

প্রদীপ আরও জানান, ডিঙি নৌকার ওপর বিশেষ কায়দায় ইঞ্জিনসহ অন্যান্য উপকরণ বসিয়ে শেওলা কাটা (কচুরিপানা) স্থাপন করা হয়। এরপর কচুরিপানার মধ্যে দিয়েই নৌকাটি চালাতে হয়। মেশিনের সাহায্যে ঘন-লম্বাকৃতির শেওলা (কচুরিপানা) কেটে দুই দিকে পড়তে থাকে। কেটে ফাঁকা হয়ে যাওয়া কচুরিপানার ভেতর দিয়ে বয়ে চলে ডিঙি নৌকা।

কেটে ফেলা শেওলা দিয়ে জৈব সার তৈরি সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলে এ ধরনের উন্নত মানের মেশিন তৈরি সম্ভব বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না বলেন, প্রদীপ বিশ্বাসের কচুরিপানা কাটা মেশিন সম্পর্কে তিনি অবহিত হয়েছেন। দেশীয় প্রযুক্তির এই উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করছেন তিনি। 

Link copied!