• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩০, ১ শা'বান ১৪৪৬

সেই সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করল পুলিশ


চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৫, ০৮:০৫ পিএম
সেই সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করল পুলিশ

ফেসবুক লাইভে এসে ওসিকে পেটানোর হুমকি দেওয়া চট্টগ্রামের সাজ্জাদকে (২৫) ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ স্বাক্ষরিত এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।  

এর আগে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমানকে ‘কুত্তার মতো পেটানোর’ হুমকি দেন সাজ্জাদ।

ফেসবুক লাইভে এসে ওসিকে উদ্দেশ্য করে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “তোকে কুত্তার মতো পিটাব। অক্সিজেন থেকে বায়েজিদ পর্যন্ত কুত্তার মতো পেটাবো। আমার হাত থেকে তোকে কেউ বাঁচতে পারবে না। প্রয়োজনে আমি মরে যাব। তবুও হার মানবো না।”

১৯ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের ফেসবুক লাইভে যেসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সেগুলোকে মিথ্যা দাবি করে পুলিশ কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পুলিশি নির্যাতনে তার তিন মাসের গর্ভজাত শিশু মারা যাওয়ার অভিযোগও করেন তিনি। হুমকির ঘটনায় থানায় জিডি করেছেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমান।

জানা গেছে, হাটহাজারীর শিকারপুর গ্রামের মো. জামালের ছেলে মো. সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ওরফে বুড়ির নাতি সাজ্জাদ। তার বিরুদ্ধে তিনটি খুনসহ অন্তত এক ডজন মামলা রয়েছে। গত ৫ ডিসেম্বর তাকে গ্রেপ্তার অভিযানে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে ফিরে আসেন পুলিশ সদস্যরা।

সিএমপি কমিশনারের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেনকে আইনের আওতায় আনার জন্য যে বা যারা তার অবস্থান সংক্রান্ত সঠিক তথ্য দিয়ে বা গ্রেপ্তারে পুলিশকে সহায়তা করবে তাকে বা তাদেরকে সিএমপির পক্ষ থেকে উপযুক্ত অর্থ পুরস্কৃত করা হবে। গ্রেপ্তারে সহায়তাকারীর পরিচয় অবশ্যই গোপন রাখা হবে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের এক সময়ের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খান। আলোচিত এইট মার্ডার মামলার দণ্ডিত এ আসামি ২০০০ সালে একে-৪৭ রাইফেলসহ গ্রেপ্তার হন। ২০০৪ সালে জামিনে বেরিয়ে তিনি বিদেশে পালিয়ে যান। তবে নগরের বায়েজিদ, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও ও হাটহাজারী এলাকায় এখনো কেউ নতুন বাড়ি নির্মাণ, ব্যবসা-বাণিজ্য, জমি বেচাকেনা করলেই ফোন আসে সাজ্জাদের। চাঁদা দিতে গড়িমসি করলে শিষ্যদের দিয়ে হামলা করেন। দুই দশকের বেশি সময় এভাবেই সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন সাজ্জাদ।

তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মধ্যে নুরুন্নবী ম্যাক্সন ভারতে গিয়ে মারা গেছেন। একাধিকবার গ্রেপ্তারের পর দলছুট ঢাকাইয়া আকবর। সারোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা পক্ষ ত্যাগ করে বাহিনী গড়েছেন। ফলে হাটহাজারী থানার শিকারপুর গ্রামের সোনা মিয়া সওদাগর বাড়ির জামালের ছেলে সাজ্জাদ হোসেনকে শিষ্য হিসেবে গড়ে তোলেন সাজ্জাদ আলী।

বর্তমানে নগরের অক্সিজেন-কুয়াইশ এলাকার দখল নিয়ে লড়াই চলছে সাজ্জাদ হোসেন ও বাবলার মধ্যে। এরই জেরে গত ২৯ আগস্ট রাতে কুয়াইশ-অক্সিজেন সড়কে মো. আনিস (৩৮) ও মাসুদ কায়ছারকে (৩২) গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পৃথক মামলাতেই আসামি সাজ্জাদ। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ৫ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর কালারপুল এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনে গিয়ে প্রকাশ্যে গুলি চালান সাজ্জাদ।

গত ২১ অক্টোবর চান্দগাঁও থানার অদুরপাড়া এলাকায় মাইক্রোবাসে এসে দিবালোকে গুলি করে আফতাব উদ্দিন তাহসীন (২৬) নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যা করে সাজ্জাদ আবারও আলোচনায় আসেন। তিন মাস পার হলেও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। সর্বশেষ গত ৫ ডিসেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে উল্টো আহত হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে পুলিশ সদস্যদের।

Link copied!