চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ইস্পাতের রডবাহী একটি লরিতে বিস্ফোরক ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই লরির চালক দগ্ধ হয়েছেন। পুড়ে যাওয়া লরিটি স্থানীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান দিদারুল আলম অ্যান্ড ব্রাদার্সের (ডিএবি) মালিকানাধীন বলে জানা গেছে।
বুধবার (১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সীতাকুণ্ড পৌর সদরের পন্থীছিলা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও হাইওয়ে পুলিশ বলছে, ছুড়ে মারা বিস্ফোরক পেট্রলবোমা ছিল।
সীতাকুণ্ডে আগুনে পুড়ে যাওয়া লরির দগ্ধ চালক ইসমাইল হোসেনকে মিরসরাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা তিনটার দিকে মোটরসাইকেলে এসে দুর্বৃত্তরা লরিটিতে বোমা ছুড়ে মারে। এরপর সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলাম ও সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের ব্যক্তিগত সহকারী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ডিএবির লরিটি বিএসআরএম কারখানা থেকে রড বোঝাই করে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। গাড়িটি বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পন্থীছিলা এলাকায় পৌঁছালে উল্টো পথে মোটরসাইকেল করে দুই দুষ্কৃতকারী এসে পেট্রলবোমা ছুড়ে পালিয়ে যায়। এতে গাড়ির সামনের অংশে আগুন ধরে যায়। চালকের গায়েও আগুন লেগে যায়। গাড়িতে থাকা সুপারভাইজার অক্ষত রয়েছেন।
জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, কী ধরনের বিস্ফোরক দিয়ে গাড়িতে আগুন ধরানো হয়েছে, তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। চালকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি। চালক মিরসরাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তবে হাইওয়ে পুলিশের কুমিরা ফাঁড়ির ইনচার্জ আমির উদ্দিনের ধারণা, ছুড়ে মারা বিস্ফোরক পেট্রলবোমা। তিনি বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে বলে আমরা জেনেছি, মোটরসাইকেলে দুর্বৃত্তরা এসে বোতল ছুড়ে মারলে গাড়িটিতে আগুন ধরে যায়। এ থেকে বোঝা যায় এটি পেট্রলবোমা ছিল।
এদিকে অবরোধের দ্বিতীয় দিন আজ চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার কদমতলী এলাকায় ককটেল ফাটিয়ে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তৌহিদুল ইসলাম নামের নগর ছাত্রদলের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, দুপুরে ১০ থেকে ১২ জন যুবক ঝটিকা মিছিল বের করেন কদমতলী এলাকায়। ওই সময় তাঁরা একটি মিনিবাসে ভাঙচুর করেন। দুটি ককটেল ফাটিয়ে দ্রুত চলে যান। খবর পেয়ে ওই যুবকদের ধাওয়া করে পুলিশ। পালানোর সময় তৌহিদুল ইসলাম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যরা পালিয়ে যান। এরপর ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে একটি ককটেল ও দুটি পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
এর আগে আজ সকালে নগরের কর্ণফুলী থানার ভেল্লা ব্রিজ এলাকায় একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। তবে কোনো যাত্রী না থাকায় হতাহত হয়নি।