এমভি বারো আউলিয়া জাহাজে করে ৯ দিন পর নিত্যপণ্য পাঠানো হয়েছে সেন্ট মার্টিনে। দ্বীপে এসেছে চাল, ডাল, চিনি, আটা, তেলসহ আরও সব পণ্য। তবে দ্বীপের সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দার জন্য তা পর্যাপ্ত নয়। সরকারি বরাদ্দের যে চাল নেওয়া হয়েছে তা পাচ্ছেন শুধু কার্ডধারীরা। ব্যবসায়ীরা জাহাজে করে যেসব পণ্য নিয়ে গেছেন তা সহজে মিলছে না।
দ্বীপের বাসিন্দারা বলছেন, ‘দোকানে পণ্য এসেছে ঠিকই, তবে দাম একেবারেই আকাশছোঁয়া। সপ্তাহ খানেক আগেও ২৫ টাকায় পাওয়া যেত দুটি ডিম। আর এখন মাত্র একটি ডিম কিনতে হচ্ছে ২০ টাকায়। এক কেজি বেগুন কেনা যেত ৬০-৭০ টাকা দরে। সেই বেগুনের দাম বেড়ে এখন প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকা।
অসহায় মানুষদের জিম্মি করে দ্বীপের ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট বেশি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। ফলে সব পণ্যের দাম নাগালের বাইরে চলে গেছে। আগে যে গ্যাস সিলিন্ডার এক হাজার ৪০০ টাকায় কেনা যেত সেই সিলিন্ডার কিনতে হচ্ছে এক হাজার ৮০০ টাকা করে।
কোরবানি ঈদ ঘাড়ের ওপর নিশ্বাস ফেললেও কারো কিছু করার নেই। এবারের ঈদের খুশি নেই সেন্টমার্টিনে। বাসিন্দাদের মনে কোনো সুখ নেই। সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন সেন্টমার্টিনে উপজেলা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে পুলিশের একটি দলসহ সহকারী কমিশনার (ভূমি), প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসাররা ট্রলারের করে টেকনাফে ফিরছিলেন। সেসময় ট্রলারটিকে লক্ষ্য করে মিয়ানমারের ভেতর থেকে ২৫ থেকে ৩০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়। সেই দিনের পর থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে কেউ যাতায়াতের সাহস পাননি।
সেন্টমার্টিন স্পিডবোট মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, সেন্টমার্টিনে যাতায়াতের কোনো বিকল্প পথ নেই। সেই ঘটনার পর গত ৮ জুন দুপুরে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনগামী পণ্যবাহী আরেকটি ট্রলারে ৩০-৪০টি গুলিবর্ষণ করা হয়। তাতে কেউ হতাহত না হলেও ট্রলারটির বিভিন্ন স্থানে সাতটি গুলি লাগে। এ ঘটনার পর নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এমন পরিস্থিতিতে তীব্র খাদ্য সংকটে পড়েন সেন্টমার্টিনে বসবাসকারী ১০ হাজারের বেশি মানুষ। এর মধ্যে বুধবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের জরুরি সভায় বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রী আসা-যাওয়া এবং পণ্যবাহী ট্রলার চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।