• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এত বড় কাঁকড়া জীবনেও দেখিনি!


শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৪, ০৮:২১ পিএম
এত বড় কাঁকড়া জীবনেও দেখিনি!
দেড় কেজি ওজনের শিলা কাঁকড়া। ছবি: সংগৃহীত

মৌসুমে মণকে মণ কাঁকড়া ধরেন সুন্দরবনের জেলেরা। তবে এখন অবধি এত বড় কাঁকড়া তাদের জালে ধরা পড়েনি। একটা কাঁকড়ার ওজন দেড় কেজি হতে পারে- সেই ধারণা তাদের ছিলই না।

এমটাই জানালেন দেড় কেজি ওজনের কাঁকড়া দেখে বিস্ময়ে হতবাক সুন্দরবনসংলগ্ন উত্তর রাজাপুর-ভোলারপাড় গ্রামের জেলে আবু হানিফ ফরাজী (৫০) ও হারুন হাওলাদার (৪৫)। তারা ১৫-২০ বছর ধরে মাছ ও কাঁকড়া আহরণ করছেন।

জেলেরা জানান, সচরাচর একটি মাদী কাঁকড়া ২০০-২৫০ গ্রাম ওজনের হয়। আর পুরুষ কাঁকড়া হয় ৩০০-৫০০ গ্রাম পর্যন্ত। কিন্তু দেড় কেজি ওজনের কাঁকড়ার খবরে তারা অবাক। শুধু কাঁকড়া আহরণকারী জেলেরাই নন, রীতিমতো অবাক হয়েছেন ব্যবসায়ী ও মৎস্য বিশেষজ্ঞরা।

শনিবার (৪ মে) বাগেরহাটের শরণখোলার বলেশ্বর নদে রহিম নামের এক জেলের জালে বিশালাকৃতির পুরুষ শিলা কঁকড়া ধরা পড়ার পর থেকেই আলোচনা চলছে।

স্থানীয় উত্তর রাজাপুর গ্রামের কাঁকড়া ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেন খান জানান, তিনি ২০ বছর ধরে মাছ ও কাঁকড়ার ব্যবসা করেন। এ পর্যন্ত তার আড়তে ৫০০ গ্রাম ওজনের বেশি কাঁকড়া পাননি। তবে শনিবার ধরা পড়া কাঁকড়াটির ওজন এক কেজি ৪৭০ গ্রাম।

ধারণা করা হচ্ছে, সুন্দরবন থেকে কাঁকড়াটি বলেশ্বর নদে চলে আসায় জেলের জালে আটকা পড়ে। কাঁকড়াটি দেড় হাজার টাকায় কিনে নিয়েছেন উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারের বিশ্বজিৎ কর্মকার নামের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, এত বড় কাঁকড়া জীবনেও দেখিনি।

জেলে রহিম কাঁকড়াটি ধরার পর তার দোকানে নিয়ে এলে দেখামাত্রই লুফে নেন বিশ্বজিৎ কর্মকার। যা দাম চেয়েছে তাই দিয়েছেন। আরো বেশি চাইলেও বিশাল এই কাঁকড়াটি বিশ্বজিৎ হাতছাড়া করতেন না বলে জানান।

কাঁকড়া ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেন জানান, কয়েক বছর আগে তিনি সাগরে ৯০০ গ্রাম ওজনের একটি কাঁকড়া ধরা পড়ার খবর শুনেছিলেন। কিন্তু দেড় কেজি ওজনের কাঁকড়ার কথা তার জানা নেই। তবে তার মনে হয়েছে কাঁকড়াটি খুবই কম দামে বিক্রি হয়েছে। এটি কোনো আড়তে নিলে কমপক্ষে দুই হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় ও শরণখোলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর সুন্দরবন থেকে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা প্রচুর পরিমাণে শিলা কাঁকড়া আহরণ করেন জেলেরা। এ ছাড়া বন থেকে ছোট কাঁকড়া সংগ্রহ করে তা বিভিন্ন এলাকার ঘেরে চাষ করে বড় করা হয়। এসব কাঁকড়া অতিরিক্ত হলে আধাকেজি (৫০০ গ্রাম) পর্যন্ত হয়ে থাকে। দেড় কেজি ওজনের কাঁকড়া এটি বিরল ঘটনা।

মৎস্য কর্মকর্তারা বলেন, শিলা কাঁকড়া সুন্দরবনেই বেশি পাওয়া যায়। বন কাছে হওয়ায় কাঁকড়াটি হয়তো সেখান থেকে বলেশ্বর নদে চলে গেছে। ছবি দেখে কাঁকড়াটি অনেক বয়স্ক মনে হয়েছে।

Link copied!