নওগাঁয় শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের চাপের মুখে পদত্যাগের পর অসুস্থ হয়ে পড়া অধ্যক্ষের শারীরিক অবস্থা ভালো নয় বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্বজনরা বলছেন, ঘটনার পর থেকে দুই দিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
জানা গেছে, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে নওগাঁর হাঁপানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ করছিল একদল শিক্ষার্থী। বুধবার শিক্ষার্থীরা আবার অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে। সেখানে বহিরাগতরাও আসে, তারা অধ্যক্ষকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি কক্ষে কিছু লোক নুরুল ইসলামকে ঘিরে ধরে আছেন। তিনি একটি কাগজে সই করার পরপরই বুক চেপে ধরে ছটফট করতে থাকেন।
নুরুল ইসলামের বড় ভাই আবু নাছের আহম্মেদ বলেন, “পদত্যাগের দাবিতে রোববার থেকে প্রতিষ্ঠানের কয়েক শিক্ষার্থী ও বহিরাগত লোকজন আন্দোলন করছিল। এ নিয়ে মঙ্গলবার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবীন শিষ শিক্ষার্থী, বিদ্যালয় ব্যবস্থা কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের নিয়ে সভা করেন এবং উভয়পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করে দেন। বুধবার দুপুরে বহিরাগত কিছু লোক নুরুলের কার্যালয়ে ঢুকে গালমন্দ ও শরীরে হাত দিয়ে টানাহেঁচড়া করতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি সেখানে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।”
তিনি আরও বলেন, “নুরুলকে উদ্ধার করে প্রথমে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল ও পরে রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে দুই দিন চিকিৎসার পর গতকাল সকালে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমার ভাইয়ের শারীরিক অবস্থা ভালো নেই, কথা যা বলছে, বোঝা যাচ্ছে না।”
নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল ইসলাম বলেন, বুধবার বিকেলে অচেতন অবস্থায় এক শিক্ষককে হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁর জ্ঞান ফেরে। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম তিনি স্ট্রোক করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রাজশাহী নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও হাঁপানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রবীন শিষ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান অস্থিরতা থামাতে গত বৃহস্পতিবার একটি সভা করেছি। সভায় সদর উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য উপস্থিত ছিলেন।