• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অসময়ের বন্যায় ডুবল কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪, ০২:০৪ পিএম
অসময়ের বন্যায় ডুবল কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে গত দুইদিন ধরে ধরলা, দুধকুমার, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তা নদীর পানি সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে কমে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি কিছুটা কমে লোকালয় থেকে নামলেও নিম্নাঞ্চলগুলোতে এখনো বন্যার পানি রয়েছে। ফলে এ নিয়ে জেলায় চতুর্থ ধাপের বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।

ইতিমধ্যে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চর ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পড়েছে। যার ফলে নিচু এলাকার ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে কাঁচা ও পাকা রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পানির টিউবওয়েল ও পায়খানা তলিয়ে যাওয়ায় পয়ঃনিস্কাশনের ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াশাম, চর খিঁতাবখা, সরিষাবাড়ী এলাকার ৭০০ শত পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে এই এলাকার গতিয়াশাস কমিউনিটি ক্লিনিক,একটি বাজার ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। পানিতে তলিয়ে গেছে বাদাম, ধান, মরিচ ও শষার ক্ষেত।

উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া, বজরা, থেতরাই, গুনাইগাছ ইউনিয়ন, সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন, চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের আংশিক অংশে ব্রহ্মপুত্র পাড়ে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার প্রায় ৮০০ শত বসভিটা ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।

হঠাৎ করে অসময়ে পানি বেড়ে যাওয়ায় তীব্র ক্ষোভ আর হতাশা দেখা গেছে নদী পাড়ের মানুষজনের মধ্যে। পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন করে আবারো ভাঙন দেখা দিয়েছে এসব এলাকায়।

রাজারহাটের তিস্তাপাড়ের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “গতকাল থেকে তিস্তার পানি উঠি আমার বসতভিটা তলে গেইছে। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টে আছি। এল্যা তো বানের সময় নোয়ায়, ভারতের পানিত সোগ তলে গেলো।”

উলিপুরের বজরা ইউনিয়নের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, “ভোর থেকে ব্রহ্মপুত্রে নদে পানি বাড়ছে। বাড়ির চারপাশে পানি। রান্নাবাড়ি, চলা ফেরার খুব কষ্ট হইছে।”

আরেক কৃষক মো. নুর ইসলাম বলেন, “আমার শাক সবজি, ও বাদাম ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। হঠাৎ করে এমন পানি হবে চিন্তাও করতে পারি নাই। অসময়ে বন্যায় সব চলে গেলো।”

কুড়িগ্রাম কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তিস্তা নদীর অববাহিকায় ১৫৯ হেক্টর রোপা আমন, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ফসল নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি পেলে এর পরিমাণ আরও বাড়াতে পারে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, সোমবার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এছাড়াও অন্যান্য নদ নদীর পানি কমবে। কিন্তু বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভবনা নেই।
 

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!