ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের লাশ বরগুনার পাথরঘাটায় মা, বাবা ও ভাইয়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টার দিকে তার নানাবাড়ি উপজেলার শতকর এলাকায় প্রথম জানাজা ও তালুকের চরদুয়ানি তালিমুল কোরআন মাদ্রাসা মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তার লাশ সমাহিত করা হয়।
স্থানীয়রা বলেন, তোফাজ্জল একজন ভালো ও রসিক লোক ছিলেন। তাকে কখনো কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে দেখা যায়নি। মানসিক ভারসাম্যহীন হলেও সবার সঙ্গেই হাসিমুখে কথা বলতেন তিনি।
জানাজায় অংশ নেওয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল হোসাইন বলেন, “দুই রাত ঘুমাতে পারিনি, শুধু চোখের সামনে ভাত খাওয়ার দৃশ্য ভেসে ওঠে। তোফাজ্জলকে আমি নিজের অর্থ দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। এরপর ও ভাইয়ের মৃত্যুর পর আবার অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। ও আমার কোনো নিকটাত্মীয় নয়, তবু ওর জন্য মায়া লাগে। এ রকম একটা কাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে তা ভাবা যায় না।”
তোফাজ্জলের স্কুলশিক্ষক গোলাম মাওলা মিলন বলেন, “স্কুলজীবন থেকেই তোফাজ্জল খুব মেধাবী ও শান্ত স্বভাবের লোক ছিল। ও সব সময় শিক্ষক ও বড়দের সম্মান করত। আমরা হত্যাকারীদের বিচার চাই এবং তার সঙ্গে যারা তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন করেছে, তাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তোফাজ্জলের মামাতো বোন তানিয়া বলেন, “আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে দোষ এড়ানোর জন্য মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করলে মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।”
গত বুধবার সন্ধ্যায় চোর সন্দেহে তোফাজ্জলকে আটক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা। পরে কয়েক দফায় মারধর করার পর রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।