বরগুনা সদর হাসপাতালে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। চলতি মাসে দুই একজন আক্রান্ত রোগী ভর্তি হলেও গতমাস থেকে হাসপাতালে প্রায় নিয়মিত ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে হাসপাতালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৫ জন।
জুলাই মাসের পরপরই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। তবে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। আক্রান্ত এসব রোগীর সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ও রোগের বিস্তার ঠেকাতে বরগুনা হাসপাতালে চালু করা হয়েছে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা দুটি ইউনিট।
এদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিলেও হাসপাতালে সব ওষুধ না থাকায় চরমভাবে ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে রোগীদের। এছাড়া মশক নিধনেও নেওয়া হয়নি তেমন কোনো ব্যবস্থা।
সরেজমিনে বরগুনা জেনারেল হসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হলেই ভর্তি করা হচ্ছে হাসপাতালে।
হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৪৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২৩, নারী ১২ এবং শিশু রোগীর সংখ্যা ১০ জন। এছাড়া গত এক বছরে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন ৫২৪ জন এর মধ্যে গত এক মাসেই ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় ৩৫০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মনির হোসেন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমি ৬ দিন হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখান থেকে খাবার ছাড়া একমাত্র প্যারাসিটামল পাই। এছাড়া প্রয়োজনীয় সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ওষুধ ও স্যালাইন বাইরে থেকেই কিনতে হয় আমাদের।”
জেসমিন বেগম নামের আরেক রোগী বলেন, “এখানে ভর্তি রোগীদের নাপা ও গ্যাসটিকের ওষুধ দেওয়া হয়। এছাড়া চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় স্যালাইন কিনতে হয় বাইরে থেকে। যার কারণে রোগীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।”
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বামীর পাশে বসেছিলেন ময়না বেগম। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “আমার স্বামী জ্বরে আক্রান্ত হলে প্রথমে বাইরে থেকে পরীক্ষা করাই। এতে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। পরে তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এখান আমার স্বামী আগের থেকে একটু সুস্থ।”
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. এ কে এম নজমূল আহসান সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালে মোট ৩৫১ জন ভর্তি রোগী রয়েছে। এর মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ মোট ৪৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। গত বছরের তুলনায় এবছর এখন পর্যন্ত বরগুনায় ডেঙ্গু রোগী কম থাকলেও এখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সময়। এ কারণে আমাদের চিকিৎসকদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া আছে। এছাড়া চিকিৎসায় প্রয়োজনী সব কিছুই আমাদের রয়েছে।”