• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

উৎসুক জনতার ভিড়ে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম


কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৪, ০১:০৬ পিএম
উৎসুক জনতার ভিড়ে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম

কুমিল্লার বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলাসহ বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে উৎসুক জনতার ভিড়ে পানিবন্দী লোকজনকে উদ্ধার করতে এবং ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া লোকজন বলছেন, অধিকাংশ লোকজন কোনো কাজ ছাড়াই ঘোরাঘুরি করছেন। কেউ মোটরসাইকেল নিয়ে দলবেঁধে এসেছেন। কেউ আবার মোবাইলে ছবি তুলতে আর ভিডিও করতে ব্যস্ত। তাদের কারণে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া বুড়বুড়িয়া এলাকায় যেখানে নদী ভাঙছে, সেখানেও ভিড় লেগেছে উৎসুক জনতার।

রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল ১১টায় কুমিল্লা-বুড়িচং সড়কের কালখড়পাড়, ভরাসার, ইছাপুরা ও মহিষমারা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উৎসুক জনতার ভিড়। তাদের কেউ এসেছেন বন্ধুদের সঙ্গে দলবেঁধে, কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে। তাদের সঙ্গে আসা যানবাহনের চাপে ত্রাণ নিয়ে আসা ট্রাক ও পিকআপকে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের কারণে বন্যাদুর্গতদের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না।

ঢাকা থেকে ত্রাণ নিয়ে আসা যোবায়ের মাহমুদ নামের এক স্বেচ্ছাসেবী জানান, তারা শুক্রবার থেকে বুড়িচংয়ে আছেন। প্রতিদিন উদ্ধার তৎপরতা এবং ত্রাণ বিতরণ করছেন। মহিষমারা এলাকায় দর্শনার্থীদের কারণে তাদের নৌকা ঠিকমতো চলাচল করতে পারে না। এজন্য ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বুড়বুড়িয়া এলাকায় যেখানে গোমতীর বেড়িবাঁধ ভেঙেছে, সেখানে অনেক লোকজন ছবি তুলছেন। কেউ কেউ ভিডিও, রিলস এবং টিকটক ভিডিও তৈরি করছেন। তাদের চাপে ভেঙে যাওয়া বাঁধ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবীরা বারবার তাদের নিষেধ করলেও তারা শুনছেন না।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী মঞ্জুরুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার কুমিল্লার বুড়িচংয়ে এত মানুষ এসেছেন যে তাদের কারণে বন্যাদুর্গত এলাকায় কাজ করা যাচ্ছে না। আজও মানুষের ব্যাপক ঢল নেমেছে। এতে করে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় সাংবাদিক গোলাম কিবরিয়া জানান, যেখানে নদী ভাঙছে সেখানেই তার বাড়ি। প্রতিদিন এত মানুষ আসছেন, তাদের বেশিরভাগই দর্শনার্থী। তাদের চাপে বন্যাকবলিত স্থানে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

বাকশিমুল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কজুড়ে শতাধিক মোটরবাইক। শহর থেকে তরুণ-যুবকরা দলবেঁধে এসেছেন বন্যার পানি দেখতে। তাদের মোটরসাইকেলের কারণে যারা আশ্রয়ের খোঁজে বাড়ি ছেড়েছেন, তারাও বিরক্ত হচ্ছেন।

কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে আবু সাঈদ ও তার বন্ধুরা মোটরসাইকেল নিয়ে বাকশিমুল এলাকায় বন্যার পানি দেখতে গেছেন। তাদের হিসাব মতে, ওই এলাকায় ১০০-১৫০ মোটরসাইকেল প্রবেশ করেছে। তারা বন্যাদুর্গত এলাকা দেখতে এসেছেন।

এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার বলেন, “এত মানুষ আসে টিকটক করতে, ভিডিও করতে। কতবার ডাক দেওয়া যায়। এসব মানুষের কারণে উপজেলা প্রশাসনের কাজ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। যারা ত্রাণ দিতে আসবেন, তারা যেন কষ্ট করে হলেও নৌকার ব্যবস্থা করে আসেন। তাহলে একদম দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। যারা দেখতে আসছেন, তাদের আসার দরকার নেই।”
 

Link copied!