• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

বন্যা সিলেটে, কাঁঠালের দামে ধস গাজীপুরে


গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৪, ০৫:৫৩ পিএম
বন্যা সিলেটে, কাঁঠালের দামে ধস গাজীপুরে
সড়কের পাশে স্তূপ করা কাঁঠাল। ছবি: সংগৃহীত

কাঁঠালের রাজধানীখ্যাত গাজীপুরে এবার কাঠালের ব্যবসায় ধস নেমেছে। বিশেষ করে কাপাসিয়া ও শ্রীপুরে ৫০ টাকা দামের কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। এতে চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এবার কাঁঠালে তাদের ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে।

কাঁঠালচাষীরা বলছেন, সিলেটে ব্যাপক বন্যার প্রভাব পড়েছে গাজীপুরের কাঁঠালের বাজারে। পানির দামে বিক্রি করতে হচ্ছে ভালো ভালো কাঁঠাল। জেলা আর উপজেলার সড়কগুলোর পাশে ও বাগানে অসংখ্য কাঁঠাল পড়ে আছে। কেনার কেউ নেই। গত এক সপ্তাহ ধরে কাপাসিয়ার আমরাইদ, রায়েদ, টোক বাজার ও শ্রীপুরের জৈনা বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে। খবর ডেইলি স্টার।

কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের কৃষি ব্লক সুপারভাইজার জাহিদ আকন্দ বলেন, “গাজীপুরের কাঁঠাল যায় মূলত সিলেট ও ঢাকায়। তবে সম্প্রতি সিলেটে বন্যার কারণে গাজীপুরের কাঁঠালের চালান আটকে গেছে। এতে গাজীপুরের কাঁঠালের ব্যবসায় ধস নেমেছে।”

কাপাসিয়া গ্রামের চাষি মামুন মিয়া বললেন, “চলতি মৌসুমে কাঁঠাল বিক্রি করে যে দু-পয়সা আয় হতো, এবার তাও হলো না। সিলেটের বন্যায় সব শেষ হয়ে গেছে।” আমরাইদ গ্রামের চাষি লিটন সিকদারের বাগানে শতাধিক কাঁঠাল গাছ আছে। এবার বাগান থেকে ৯০টি গাছের কাঁঠাল মাত্র ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। 
কাঁঠাল চাষি লিটন সিকদার বলেন, “গেল বছরে একই বাগানের কাঁঠাল বিক্রি করে হাতে এসেছিল ৮০ হাজার টাকার মতো। তিনি আরও বলেন, বিক্রি না হওয়ায় গাছ থেকে শত শত কাঁঠাল পচে গলে নিচে পড়ছে।”

লোহাদী গ্রামের চাষি কামাল হোসেন জানালেন, আগের দিন তিনি গাছ থেকে ৮০০ কাঁঠাল কেটেছেন। এর মধ্যে ৩০০ কাঁঠাল পচা হওয়ায় ফেলে দিয়েছেন। কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, বর্ষা বা বন্যার সময় কাঁঠাল নিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জে যাওয়া সম্ভব হয় না। গাড়ি থেকে কাঁঠাল নামানোও যায় না।

কাপাসিয়া উপজেলার দরগা বাজার এলাকার কাঁঠাল ব্যবসায়ী কফিল উদ্দিন জানালেন, বন্যার কারণে তিনি কাঁঠাল নিয়ে সিলেটের বাজারগুলোতে যেতে পারছেন না। যে কারণে কাঁঠাল কিনতে গিয়ে থমকে যাচ্ছেন। জানালেন, সপ্তাহ দুয়েক আগেও আমরাইদ এলাকা থেকে কাঁঠালের বড় গাড়ি সিলেটে যেত ১৬টি করে। আর এখন চার-পাঁচটা গাড়িও যাচ্ছে না।

কাঁঠাল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, জেলায় কাঁঠাল সংরক্ষণের ভালো ব্যবস্থা বা হিমাগার নেই। তাদের দাবি ফল হিমাগার স্থাপনের ব্যবস্থা নিয়ে কাঁঠালের পাশাপাশি অন্যান্য মৌসুমি ফলও সংরক্ষণ করা যাবে। এতে লাখ লাখ টাকা ক্ষতির হাত থেকে চাষি ও ব্যবসায়ীরা রক্ষা পেতেন।

জানতে চাইলে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, “কাঁঠাল সংরক্ষণে হিমাগার বিষয়ে পাইলটিং প্রকল্প আছে। বরাদ্দ পেলে কাঁঠাল প্রসেসিং সেন্টার স্থাপন করা হবে।”

Link copied!