ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বান্দরবানের রুমা-থানচিতে একটি বেইলি ব্রিজ দেবে গেছে। এতে ওই সড়ক দিয়ে বর্তমানে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গত রোববার (২৬ মে) থেকে থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাত ও হাল্কা থেকে মাঝারি ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকে। এতে বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ লাইনে গাছ ভেঙে পড়ে প্রায় ১৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জেলা সদর, থানচি ও রুমায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এসব এলাকা।
এদিকে বান্দরবান-রুমা-থানচি সড়কের মিলছড়ি পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন বেইলি ব্রিজের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে ব্রিজের গাইড ওয়াল ভেঙে যাওয়ায় বান্দরবান থেকে রুমা-থানচিতে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
থানচি বাস মালিক সমিতির লাইনম্যান সাহাব উদ্দীন জানান, ব্রিজের একপাশে গাইড ওয়াল ভেঙে দেবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ব্রিজটি। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে রুমা-থানচিতে সকল প্রকার ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
মিলনছড়ি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ রবিন্দু চাকমা জানান, ভারী বৃষ্টির ফলে মিলনছড়ি ক্যাম্প ও লাইমী পাড়ার মাঝামাঝি বেইলি ব্রিজের দক্ষিণ পাশের একাংশ দেবে যাওয়ার কারণে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ দিকে খুঁটি উপড়ে গাছপালা ভেঙে জেলার আলীকদম, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড় রেমালে কোনো প্রাণহাণির ঘটনা না ঘটলেও টানা বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের শঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বান্দরবান পৌর এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখনো পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে থেকে মাইকিং অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে বান্দরবান পৌরসভার মেয়র শামসুল ইসলাম বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। তবে অনেক পরিবার এখনো ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়েই রয়ে গেছেন। তাদের নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে জেলায় এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ক্ষয়-ক্ষতির সংবাদ পাওয়া যায়নি।