সুন্দরবনের রাজা রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সেই বাঘের রাজত্বেই পথ ভুলে ঢুকে পড়েছিলেন একদল শিক্ষার্থী। তবে বাঘের পেটে যাওয়ার আগেই তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সেই উদ্ধার অভিযানের বর্ণনা দেন মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, সোমবার সকাল ১০টার দিকে ৩১ জন শিক্ষার্থী সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে ঘুরতে যান। করমজল বন্যপ্রাণী ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে তারা হেঁটে বনের ভেতরে প্রবেশ করেন।
এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে হাঁটতে হাঁটতে তারা কখন যে বনের গহীনে চলে যান তা বুঝতে পারেননি। পরে ফেরার চেষ্টা করলে তারা পথ হারিয়ে ফেলেন। তাদের মধ্যে ফেরদৌস ইসলাম জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’-এ ফোন করে সাহায্য চান।
ওসি আজিজুল ইসলাম বলেন, “জরুরি সেবা থেকে থানায় বিষয়টি জানালে আমরা বনবিভাগকে জানাই। পরে সেই পর্যটকের নম্বরে ফোন করে তাদের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। ফোনে তাকে বলি, সূর্য এখন কোথায়? যদি সূর্য তোমাদের মাথার ওপরে থাকে তাহলে ছায়া যেদিকে পড়বে তোমরা সেই ছায়া দেখে দেখে হাঁটতে থাক। আর বনের ভেতরে ঢোকার সময়ে তোমাদের কাছে থাকা ফোনে যেসব ছবি বা ভিডিও করেছো তা দেখে মিলিয়ে নাও। ছবি মিলে গেলে বুঝতে তোমরা ঠিক পথে হাঁটছ। এভাবে নিজেদের ছায়া ও ছবি দেখে দেখে এক ঘণ্টার বেশি সময় হেঁটে করমজল বন্যপ্রাণী ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে তারা ফিরে আসেন।”
শিক্ষার্থীদের দলে থাকা ফেরদৌস রাতে সাংবাদিকদের বলেন, “সুন্দরবনে আগে কখনো আসিনি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আমরা ৩১ জন বনে আসি। সবাই হেঁটে বনের ভেতরে ঢুকি। গাছপালা দেখতে দেখতে কখন যে গহীনে চলে যাই বুঝতে পারিনি। পথ হারানোর পর কয়েকজন ভয় পায়। তখন বুদ্ধি করে ‘৯৯৯’ এ ফোন করে সাহায্য চাই।”
ফেরদৌস বলেন, “পুলিশের সহযোগিতা না পেলে আমরা ফিরতে পারতাম কিনা জানি না। তবে সুন্দরবন দেখতে এসে দারুণ অ্যাডভেঞ্চার হয়েছে। এটা জীবনেও ভুলতে পারব না।”
করমজল বন্যপ্রাণী ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, সুন্দরবনে ঘুরতে আসা ওই শিক্ষার্থীরা বনবিভাগকে না জানিয়ে বনের এদিক ওদিক ঢুকে পড়েন। তারা যেখানে গিয়েছে সেখানে প্রায়-ই বাঘ দেখা যায়। অনেক বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।