• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সেতুর অপেক্ষায় দুই গ্রামের মানুষের ১৫ বছর পার


সুজন মোহন্ত, কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩, ০৮:৫৯ এএম
সেতুর অপেক্ষায় দুই গ্রামের মানুষের ১৫ বছর পার
গ্রামের মানুষের দেওয়া চাঁদার টাকায় নিয়মিত সংস্কার করতে হয় এই সাঁকোটি

কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নামা ভেলাকোপা ও টাপু ভেলাকোপা গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভসরা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো। দীর্ঘ ১৫ বছরেও দুই গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ কাটেনি।

বর্ষার শুরুতেই প্রতিবছর গ্রামের মানুষের দেওয়া চাঁদার টাকায় নিয়মিত সংস্কার করতে হয় এই সাঁকোটি। বছরের পর বছর জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাস আর সান্ত্বনা পেলেও তাদের কপালে জুটছে না একটি সেতু।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে এই সাঁকোটি দিয়ে পার হতে হচ্ছে খালের দুই দিকের গ্রামের বাসিন্দাদের। পাশাপাশি দুই দিকে মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকায় শিশু শিক্ষার্থীদেরও ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। দিন দিন এখন যেন এক মরণফাঁদ হয়ে উঠছে নড়বড়ে রেলিং বিহীন এই সাঁকোটি। বাঁশের চাটাই বিছানো ২ ফুট প্রস্থ আর ৯০ ফুট দৈর্ঘ্যের সাঁকোটি ছাড়া আর কোনো রাস্তাও নেই।

পারাপার নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে হাজারো আবেদন আর অভিযোগ জমা হলেও পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর উদাসীনতাকে দায়ী করছেন দুই গ্রামের বাসিন্দারা।

সাঁকো দিয়ে চলাচলরত রিকশাচালক খোকন মিয়া বলেন, “রিজার্ভ ছাড়া এইদিকে তেমন একটা ভাড়া মারি না। বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়া গাড়ি চালানো খুব রিস্কের। ১৫ বছর আগে এইখানে বাঁধ ছিলো। বানের পানির আসার পর থেকে এইটা খাল হয়্যা গেইছে।”

ভেলাকোপার কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা ফজলুল করিম ফারাজী বলেন, “আমি প্রতিদিন মোটরসাইকেল নিয়ে এই সাঁকো দিয়ে শহরে চলাচল করি। নড়বড়ে এই সাঁকো পার হতে খুব কষ্ট হয়। মাঝে মধ্যে আতংকে থাকি পানিতে পড়ে যাওয়ার।”

আরেক বাসিন্দা জাবেদ আলী বলেন, “আমরা চাঁদা তুলে এই বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেছি। সারা বছর এই সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয়। তাছাড়া হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে হাসপাতালে নেওয়া কঠিন হয়ে যায়। আমরা দ্রুত একটা ব্রিজ চাই।”

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এইখানে একটি কালভার্ট করার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিনিয়ত চিঠি পাঠাচ্ছি। সমস্যাটা হলো এলজিইডি পৌরসভার ভেতরে কাজ করতে চায় না। আমরা চেষ্টা করছি কোনো না কোনো ফান্ড থেকে এখানে কালভার্ট নির্মাণ করার।”

কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র মো. কাজিউল ইসলাম বলেন, “ব্রিজের চাহিদার বিষয়টি অনেক আগেই ঢাকায় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। ঢাকা থেকে অর্থ বরাদ্দ আনার চেষ্টা করছি। ফান্ডের ব্যবস্থা হলেই টেন্ডার করে ওখানে কাজ শুরু করা হবে।”

Link copied!