প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালে। শুরু থেকে মেডিকেল কলেজটির কার্যক্রম শুরু হয় রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালের একটি পাঁচতলা ভবনের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে।
মেডিকেল কলেজটি যাত্রার দীর্ঘ আট বছর পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি স্থায়ী ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের থাকার মতো নেই পর্যাপ্ত আবাসিক হোস্টেল। প্রতিবছর শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও এখনো চালু করা হয়নি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় একই ছাদের নিচে চলছে ক্লাস, পরীক্ষা ও অফিসের কার্যক্রম। তা ছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, অডিটরিয়াম, লাইব্রেরি, আধুনিক ল্যাব ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ।
রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা যায়, মেডিকেল কলেজটিতে প্রতিবছর ৫১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এখানে এক বছর মেয়াদি হাতে-কলমে শিখনসহ স্নাতক পর্যায়ের পাঁচ বছর মেয়াদি এমবিবিএস শিক্ষাক্রম চালু রয়েছে।
জানা গেছে, দীর্ঘ আট বছরেও রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস চালু না হওয়ায় মেডিকেল কলেজের যাবতীয় কার্যক্রম চলছে জেলার জেনারেল হাসপাতালের হৃদরোগ করোনারি বিভাগে। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে গাদাগাদি করে বসে ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মো. সাজেদুল হক বলেন, “কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে দুই বছর আমরা আন্দোলনও করেছি। এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাস চালু হয়নি। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য নেই স্থায়ী আবাসিক হোস্টেল। সরকারের কাছে একটাই দাবি, রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস দ্রুত নির্মাণ করা।”
মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার বলেন, “আবাসনের সমস্যা আছে, কিছু ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক সংকট রয়েছে। কোনো একটা ব্যাচের যদি পরীক্ষা চলে, তাহলে দেখা যায় অন্য ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্লাস করার জায়গা থাকে না।”
রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. প্রীতি প্রসূন বড়ুয়া জানান, বর্তমানে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজে পাঁচটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অধ্যয়নরত। সামনে আরও একটি ব্যাচ ভর্তি হবে। কিন্তু কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় সমস্যার কোনো শেষ নেই। বিশেষ করে শ্রেণিকক্ষ সংকট প্রকট। ইন্টারনিদের বর্তমানে কোনো হোস্টেল না থাকায় পাশ করার পরে তাদের রাখতে পারছি না। নিজস্ব ক্যাম্পাসে কাজ শুরু করতে না পায় এ সমস্যা জটিল হয়ে উঠছে।
রাঙ্গামাটি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অনিন্দ্য কৌশল জানান, রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য শহরের রাঙ্গাপানি সুখী নীলগঞ্জ এলাকায় ২৫ একর ভূমির অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। ডিপিডি প্রস্তুত করে সেটা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এবং ডিপিডি অনুমোদনের পরে এখানে অনুমোদন সাপেক্ষে আমরা নির্মাণকাজ শুরু করব।