নতুন বছর মানে নতুন কিছু ভাবনা, নতুন কিছু আশা, নতুনের সঙ্গে পথ চলা। এ নিয়েই জীবন শুরু। তার বাইরেও কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যায় যা কখনোই ভোলার নয়। নতুন বছর কারো জীবন হয় সুখের, আবার কারো বা দুঃখের। নিচে ২০২২ সালে খুলনায় ঘটে যাওয়া ঘটনার কিছু অংশ তুলে ধরা হলো।
ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে শিশুহত্যা
বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি রোববার দুপুরে নগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার দ্বিতীয় ফেজের ১৪ নম্বর রোডের একটি মাঠে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে শুভ হাওলাদার (১১) নামের এক শিশুকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত শুভ হাওলাদার নগরীর আনিস বিশ্বাস আদর্শ স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র।
খুলনার দুদক কার্যালয়ে আগুন, পুড়েছে ফাইলপত্র
২ জুন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় ছয়টি কক্ষে আগুন লেগে ফাইল ও আসবাব পুড়ে গেছে। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে ভবনের জানালা দিয়ে ধোঁয়া বের হতে দেখে দমকল বিভাগের দুটি ইউনিট ৪৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আন।
মরিয়ম মান্নানের মায়ের নিখোঁজ রহস্য
গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানের নলকূপে পানি আনতে যান রহিমা বেগম। কিন্তু এক ঘণ্টা পরও তিনি বাসায় না ফেরায় তার সন্তানেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। নলকূপের পাশে তাদের মায়ের জুতা, ওড়না ও পানির পাত্র পড়ে থাকলেও মাকে তারা খুঁজে পাননি।
এ ঘটনায় ওই রাতেই রহিমা বেগমের ছেলে মিরাজ আল সাদী দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা করেন মেয়ে আদুরী আক্তার। এ ছাড়া বিষয়টি র্যাবকেও জানানো হয়। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মায়ের সন্ধান চেয়ে ঢাকায় মানববন্ধনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে দৌড়ঝাঁপ করে আসছিলেন সন্তানরা।
এর মধ্যে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বওলা গ্রামের ঝোপ থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহটি নিজের মায়ের বলে দাবি করেন মরিয়ম মান্নান। ‘মরদেহ শনাক্তে’ এরপর তিনি ফুলপুর থানায় যান। সে সময় মরিয়ম মরদেহটি তার মায়ের দাবি করে নিয়ে যেতে চান। সেখানে মরদেহের পরিহিত কাপড় দেখেন। এরপর মরিয়ম দাবি করেন, মরদেহটি তার মায়ের। পরে মরিয়ম মান্নান ফুলপুর থানায় ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করেন।
নিখোঁজের ২৯ দিন পর ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ১০.৪৫ মিনিটের দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে পুলিশ মরিয়মের মাকে জীবিত উদ্ধার করে।
সিত্রাংয়ে খুলনায় ক্ষয়ক্ষতি
২৫ অক্টোবর আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। সিত্রাং শব্দের অর্থ পাতা। ২০১৭ সালের ঘূর্ণিঝড় মোরার পর এটিই ছিল সরাসরি বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আঘাত হানা প্রথম ঘূর্ণিঝড়।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে খুলনা জেলায় ৪৬ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এছাড়া ১ হাজার ৪০০টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধানে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামত করেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে খুলনা জেলায় ৪৬ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এছাড়া এক হাজার ৪০০ ঘরবাড়ি, দেড় হেক্টর ফসলি জমি, এবং দেড় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।