আগামী ১৯ নভেম্বর সিলেট মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। সবচেয়ে বড় বিভাগীয় গণসমাবেশ আয়োজনের লক্ষ্য নিয়ে সিলেট বিভাগজুড়ে জোর প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ কেন্দ্র করে ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো নগরী। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। সমাবেশস্থল সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের চারদিক বিএনপির বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও ব্যানারে সয়লাব। রংবেরঙের এসব ফেস্টুন ব্যানারে শোভা পাচ্ছে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দী নেতাদের মুক্তি ও বিভিন্ন দাবির কথা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ব্যানার-পোস্টার, ফেস্টুন টাঙাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। অনেক প্রবাসী নেতাও তাদের সমর্থকদের দিয়ে ব্যানার-পোস্টার সাঁটিয়েছেন। এ ছাড়া নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্রতিদিন চলছে মাইকিং, নেতাকর্মীরা ঘুরে ঘুরে করছেন লিফলেট বিতরণ।
বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, নগরীতে এত বেশি পোস্টার-ব্যানার এক দশকে দেখা যায়নি। এবার সবকিছু হচ্ছে শৃঙ্খলামতো। কর্মী-সমর্থকদের উৎসাহ অন্য যেকোনো সময় থেকে এবার বেশি। তাই পুরো নগরীর অলিগলিতেও পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় এমন নেতাও ব্যানার-ফেস্টুনের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন।
সিলেট জেলা জাসাসের সদস্যসচিব রায়হান এইচ খান বলেন, “সমাবেশ ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ–উদ্দীপনা কাজ করছে। ১৯ নভেম্বর বিএনপির সমাবেশ লোকে লোকারণ্য হবে। জাসাসের উদ্যোগে জাতীয় সংগীত ও দলীয় পরিবেশনের মাধ্যমে বিভাগীয় সমাবেশ শুরু হবে।”
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, “দলীয় নেতাকর্মীরা ক্ষমতাসীন দল ও প্রশাসনের নানা বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। সব প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সিলেটের জনসভা সফল হবে।”
গণসমাবেশ সফলে ছয় কমিটি
সিলেটে বিভাগীয় গণসমাবেশকে সফলে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে বিএনপি। বিভাগীয় গণসমাবেশ সফলে করা হয়েছে ৬টি কমিটি।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আবাসন ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ ছাড়া ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির।
প্রচার ও মিডিয়া কমিটিতে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, অভ্যর্থনা কমিটর দায়িত্বে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী, আপ্যায়ন কমিটির দায়িত্বে মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন এবং দপ্তর কমিটিতে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ূন কবির শাহীন। সার্বিক তত্ত্বাবধানে আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল মঈন খান এবং যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন।
এ ছাড়া ৬টি আহ্বায়ক কমিটিতে সিলেট বিভাগের কেন্দ্রীয় নেতা এবং বিএনপির জেলা, মহানগর, পৌরসভা, উপজেলা পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারাও সদস্য হিসেবে আছেন। এসব কমিটির আহ্বায়কেরা নিজেদের প্রয়োজনমতো অন্য নেতাকর্মীদের সদস্য হিসেবে রাখবেন বলে জানা গেছে।
ছয়টি কমিটিতে সংযুক্ত আছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী, সিলেট বিভাগের দায়িত্বরত বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হাসান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ, ক্ষুদ্র ঋণবিষয়ক সহসম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী ও মিজানুর রহমান চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি নাসের রহমান, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক জি কে গৌছ, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মিফতাহ সিদ্দিকী।
এসব কমিটি সমাবেশ আয়োজনে যাবতীয় প্রস্তুতি নেবে জানিয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ১৯ নভেম্বর নগরের সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশ সফলে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে নেতাদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কমিটি শনিবার (১২ নভেম্বর) থেকে কাজ শুরু করেছে।