বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে খুলনাঞ্চলে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। এরই মধ্যে ফুঁসে উঠেছে উপকূলীয় নদ-নদীর পানি। লঘুচাপের প্রভাবে নদীর জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। নিম্নাঞ্চলে প্লাবনের শঙ্কায় স্থানীয়রা। একই সঙ্গে মোংলা বন্দরের অদূরে গভীর সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। এতে বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
অপর দিকে নিম্নচাপের প্রভাবে হঠাৎ গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে শিল্প নগরী খুলনার জনজীবন। রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত এবং ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে শহরে। এতেই ভিজে গেছে গোটা শহর। আর শীতল হয়েছে খুলনার প্রকৃতি। খুলনার সর্বত্র তীব্র গরমে বৃষ্টির প্রত্যাশা ছিল মানুষের।
রোববার দুপুরের পর থেকে বৈরী আবহাওয়ায় গুঁড়ি গুঁড়ি টানা বৃষ্টিতে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষ। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হয়নি অনেকে। একান্ত প্রয়োজনে যারা বের হয়েছে, তাদেরও পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে। হঠাৎ এই বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী ও অফিসগামী মানুষকে।
কথা হয় সবজি বিক্রেতা কাদের হোসেনের সঙ্গে। কাদের হোসেন ভ্যানে করে সবজি ফেরি করেন। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “টানা বৃষ্টির কারণে সবজি নিয়ে বের হতে পারছি না, রাস্তায় কোনো ক্রেতা নেই। বিভিন্ন গলিতে ঘুরেও ক্রেতাদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। সবজি বিক্রি না করতে পারলে পচে যাবে। সবজি নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।”
রোববার খুলনার আকাশে খানিক সময়ের জন্য সূর্যের দেখা মিললেও সোমবার ও আজ খুলনাঞ্চলের আকাশে সূর্যের দেখা মিলছে না। মাঝারি ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে সড়কে মানুষের চলাফেরা বাধার মুখে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াতে অভিভাবকরা বিপাকে পড়েছেন। খুলনা নগরীর অনেকাংশেই রাস্তার কাজ চলছে। টানা বৃষ্টির কারণে সে কাজও বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টিতে ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পড়েন চরম বিড়ম্বনায়। ঘর থেকে বের হতে ছাতার ওপর ভরসা করতে হচ্ছে সবাইকে।
লঘুচাপের কারণে টানা বর্ষণে থমকে গেছে উপকূলীয় জনজীবন। জোয়ারে বেড়ে গেছে সব নদ-নদীর পানির উচ্চতা। ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে তলিয়ে গেছে উপকূলীয় খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল। ভেসে গেছে মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে আমনের বীজতলা। বাড়িঘরে পানিবন্দি হয়ে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ।
খুলনার আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, “বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের কারণে খুলনাঞ্চলে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। এছাড়া অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া ও বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।”