• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সরিষার ফুলে সেজেছে কয়রার ফসলের মাঠ


সাব্বির ফকির, খুলনা
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২, ০৮:৪০ এএম
সরিষার ফুলে সেজেছে কয়রার ফসলের মাঠ

নীল আকাশের নিচে শীতের সোনাঝরা রোদে ঝিকিমিকি করছে ফসলের মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ। সকালের সূর্যের কিরণ প্রতিফলিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সরিষা ফুলে রঙে হেসে ওঠে চারদিক। এ যেন এক অপরূপ সৌন্দর্য। দেখে মনে হয় হলুদ বরণে সেজেছে প্রকৃতি। মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছিরা। হলুদ আর হলুদের আভায় যেন কয়রার মাঠ সেজেছে আপন মহিমায়। সবুজ প্রকৃতি যেন হলুদের দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। সরিষার ফুলের ম-ম গন্ধে এখন মৌমাছির গুঞ্জন সরব হয়ে উঠেছে প্রকৃতি।

সরেজমিনে খুলনার কয়রা উপজেলার উলা, ৩ নম্বর কয়রা সরিষা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সরিষা মাঠে ভিড় করেছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ। কেউবা আবার মোবাইল ফোনে সেলফি তুলছেন। এমন চিত্র দেখা গেছে কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। চারপাশে শুধু সরিষা ফুলের ম-ম গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠগুলো। অল্প সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় সরিষা চাষে ঝুঁকেছেন স্থানীয় কৃষকরা।

বাগালী ইউনিয়নের কৃষক আলাউদ্দীন বাবু বলেন, “কম পুঁজিতে সরিষার চাষে দ্বিগুণ লাভ হয়। প্রতি বিঘা জমিতে চার-পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে ৭ থেকে ৮ মণ সরিষা উৎপাদন করা যায়। আবার সরিষা ঘরে তোলার পর ওই জমিতেই মুগ ডাল চাষ করা যায়।”

সরিষা আবাদের কারণে ওই জমিতে বাড়তি হাল চাষ, সার, কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। তাই তার মতো অনেকেই সরিষা চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে।

আরেক কৃষক মজিবর রহমান বলেন, “দেশীয় সরিষার জাতগুলোর চেয়ে বারি সরিষা-১৮ জাতের সরিষার ফলন ভালো হয়। স্বল্প খরচে অধিক ফলন ও ভালো দাম। তাই প্রতিবছরই এ সময়ে সরিষার আবাদ করি।”

৪ নম্বর কয়রা গ্রামের কৃষক আহমেদ আলী ও গোপাল জানান, কয়েক বছর আগেও তাদের জমি পরিত্যক্ত থাকত। বর্তমানে সরেজমিন কৃষি গবেষণা বিভাগের পরামর্শে তারা এখন জমিতে সরিষা চাষ করছেন। 

সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চোখে পড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ। 

দর্শনার্থী বিপাশা বিশ্বাস জানান, এমন সৌন্দর্য কাছ থেকে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবেন না। আসলেই যে সুঘ্রাণটি অনুভব করি, সেটি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

সরেজমিন গবেষণা বিভাগ এমএলটি সাইট কয়রার বৈজ্ঞানিক সহকারী জাহিদ হাসান জানান, এ বছর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ থেকে কয়রা উপজেলার বিভিন্ন কৃষককে বারি সরিষা ১৪, ১৭ ও ১৮, সরিষার বীজ ও সার বিনা মূল্যে দেওয়া হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর সরিষা আবাদে তেমন পোকার আক্রমণ না থাকায় কৃষকরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন।

সরেজমিন গবেষণা বিভাগ খুলনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হারুনর রশিদ জানান, এ বছর কৃষকদের সরিষা চাষে ব্যাপক সচেতন করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে কৃষকদের বিনা মূল্যে বারি সরিষা-১৮-এর বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।

Link copied!