হেমন্তের শেষ ও শীতের আগমনীতে ঝাকে ঝাকে অতিথি পাখিদের আগমন ঘটেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। দিনভর জলকেলি, খুনসুটি সে সঙ্গে কিচির-মিচির শব্দ, কখনো ঝাঁক বেঁধে নান্দনিক কসরতে ডানা মেলে নীল আকাশে ওড়োউড়ি ও কলকাকলিতে মুখরিত চারপাশ। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অগণিত পাখির কিচির-মিচির শব্দে মুগ্ধ ওই এলাকার বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা এ স্থানটিকে পাখির ‘মঞ্জিল’ বলে ডাকেন। পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়ে চলা, খাবারের সন্ধানে লেকের এক পাশ থেকে আরেক পাশে অবাধ বিচরণ দেখতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন পাখি ও প্রকৃতি প্রেমীরা।
অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর, সবুজের সমারোহে ঘেরা শ্রীমঙ্গলের রাজঘাট চা বাাগান। এ চা বাগানের রয়েছে একটি মনোরম নয়নাভিরাম লেক। লেক এর চারপাশে চা বাগান। লেকটি দেখলে মনে হবে সবুজের বুকে বাংলার মানচিত্র। তিন টিলার মধ্যখানে প্রাকৃতিকভাবেই প্রায় ১০ একর আয়তনের এ লেক।
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ২৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রাজঘাট লেক। চারপাশজুড়ে সবুজের সমারোহ আর উঁচু-নিচু টিলা থেকে লেকে পর্যন্ত নেমে এসেছে সবুজ সারি সারি চা বাগান। মাঝখানের সমতলে এই প্রাকৃতিক লেকের অবস্থান।
বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখিসহ হাজারো অতিথি পাখি দল বেঁধে আসছপ। ফলে লেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাখিপ্রেমীদের আনাগোনা বাড়ছে।
চা বাগানের এ লেকটি অতিথি পাখির কারণে ইতোমধ্যে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। পাখির বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি, উড়ে চলা, নীরবে বসে থাকা মানুষকে আকৃষ্ট করে। তাই দূরদূরান্ত থেকে লোকজন একনজর পাখি দেখার জন্য এখানে আসেন। চলমান রাস্তার লোকজন গাড়ি থামিয়ে অথবা পায়ে চলার পথে এখানে একদ- দাঁড়াতে বাধ্য হন।
এখানে পাখিদের আনন্দে মেতে ওঠার সৌন্দর্য খুব কাছে থেকে দেখা যায়। এমনই একটি সৌন্দর্য লেক, যা বারবার দেখার ইচ্ছে জাগে। ক্লান্ত মনকে প্রশান্তি পেতে ছুটে আসুন রাজঘাট চা বাগান লেকে। আপনাকে দেবে বাড়তি আনন্দ।
ঘুরতে আসা পর্যটক আশিক উদ্দিন বলেন, “এখানে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি দেখে আমি মুগ্ধ। লেকের ধারের সবুজ বাগান প্রকৃতি আনন্দ দেয়। কিছুটা বড় আকারের কয়েকটি পাখির দেখা পেলাম।”
পর্যটক সুমি আক্তার বলেন, “পাখির কিচিরমিচির শব্দ, ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়ানো ও বিলের পানিতে ঝাঁপাঝাঁপি দৃশ্য নজর কেরেছে।”