ফেনী-৩ আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা হাজী রহিম উল্লাহর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসাদ বেগম রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসান তানিম টমটম চালক জাফর হত্যা মামলায় আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত হাজী রহিম উল্লাহসহ ৫ আসামির প্রত্যেককে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী ফেনী জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, টমটম চালক জাফর হত্যা মামলায় হাজী রহিম উল্লাহসহ গ্রেপ্তার ৫ আসামির প্রত্যেকের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
এর আগে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটম চালক জাফর হত্যা মামলায় ফেনী-৩ আসনের সাবেক এমপি হাজী মো. রহিম উল্লাহকে (৬৬) শনিবার (১২ অক্টোবর) ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩ আগস্ট শহরের ট্রাংক রোডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটম চালক জাফর আহাম্মদ স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করেন। আন্দোলনে তার অংশগ্রহণের বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশ হয়।
ওইদিন শর্শদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঁইয়াসহ আরও ১০-১১ জন আসামি জাফরের বাড়িতে গিয়ে হত্যার হুমকি দেন। ভয়ে স্ত্রী আছিয়া স্বামীকে সেদিন বাসায় আসতে নিষেধ করেন। জাফরও তার স্ত্রীর কথা মতো সেদিন আর বাসায় যাননি। পরদিন ৪ আগস্ট দুপুরের দিকে জাফরকে ফেনী শহরের পুরাতন জেল রোডস্থ জেলা কারাগারের সামনে ধারাল অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তা থেকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গত ৫ সেপ্টেম্বর নিহত জাফরের স্ত্রী আছিয়া বেগম বাদী হয়ে ২০৫ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১০০-১০৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফেনী-৩ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, হাজী রহিম উল্লাহ ২১ বছর সৌদি আরবের জেদ্দা প্রবাসী শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ফেনী-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কারচুপি, এজেন্টদের বের করে দেওয়া ও ভোটকেন্দ্রে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে ফলাফল ঘোষণার আগ মুহূর্তে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।