পঞ্চগড়ে স্কুলছাত্র আসাদুজ্জামান পায়েলকে (১৭) অপহরণের পর হত্যার অভিযোগে ৩ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে পঞ্চগড় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এসএম রেজাউল বারী এই আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের বলরামপুর তাতীপাড়া এলাকার মহির উদ্দিনের ছেলে নুরুজ্জামান (২৯), দুদু মিয়ার ছেলে ফরহাদ হোসেন (২১) ও রশিদুল ইসলামের ছেলে হাসানুল ইসলাম (২৩)। রায় ঘোষণার সময় ফরহাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, দেবীগঞ্জ উপজেলার বলরামপুর তাতীপাড়া এলাকার স্কুল ছাত্র আসাদুজ্জামান পায়েল ২০১৫ সালের ১৮ জুন সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের দেউনিয়ার বাজারে হালখাতা খাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়। ওই দিন তার বাবা সুলতান আলী ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে ছেলেকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন ছেলের মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন করে ৩ দিনের মধ্যে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ২০ জুন সুলতানের ভাই মহির উদ্দিন দেবীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ২২ জুন পায়েলের বাবা ফরহাদ ও রশিদুলের কিছু কথা শুনে তার সন্দেহ হয়। পরে বিষয়টি স্থানীয়দের জানালে স্থানীয়রা নুরুজ্জামান, ফরহাদ ও রশিদুলকে আটক করে। নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করা হলে তারা শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে মরদেহ উদ্ধার করা হয় এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিনই দেবীগঞ্জ ওই তিন জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন পায়েলের বাবা সুলতান আলী। এই মামলায় ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট ওই তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দেবীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক সাইদুর রহমান।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজ আদালত ওই তিন আসামির মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন।”
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী এবিএম জুলফিকার আলী নয়ন বলেন, “আমরা আদালতে ওই আসামি যে পায়েলকে হত্যা করেছে, তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি। আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।”
আসামি পক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমরা উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।”