• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

যে কারণে সন্তানকে হত্যা করেন চিকিৎসকের দ্বিতীয় স্ত্রী


কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৪, ০৯:০৪ পিএম
যে কারণে সন্তানকে হত্যা করেন  চিকিৎসকের দ্বিতীয় স্ত্রী
মা তিশা আক্তার ও নবজাতক শিশুর মরদেহ। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে বাধা ভেবেই নবজাতক সন্তান তাসনিব ওসমানকে নবম তলার ভেন্টিলেটর দিয়ে ফেলে হত্যা করেছেন মা তিশা আক্তার। আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে নিজ সন্তান হত্যার দায় স্বীকার করে এ তথ্য দিয়েছেন।

বুধবার (১৯ জুন) দুপুরে ভৈরব থানার পুলিশ তিশা আক্তারকে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কিশোর দত্তের আদালতে হাজির করে। বিকেলে বিচারকের কাছে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

তিশা আক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বক্ষব্যধি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার ওসমান গণির দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনি অনার্সের শিক্ষার্থী। নিহত তাসনিব ওসমান গণি ও তিশা দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান।

ডা. ওসমান গণি তার দ্বিতীয় স্ত্রী তিশা, দেড় বছরের এক ছেলে, স্ত্রীর বান্ধবী সুমাইয়া ও দুই কাজের মেয়ে নিয়ে বসবাস করেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব শহরের কমলপুর নিউ টাউন এলাকার হাজী ফুলমিয়া সিটির ওয়ার্কিং ফেইস বিল্ডিংয়ের নবম তলায়।

তিশা অনার্সের শিক্ষার্থী হওয়ায় দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার পক্ষে ছিলেন না। স্বামীর কারণে তিনি দ্বিতীয় সন্তান নিতে বাধ্য হন। তবে বিষয়টিকে তিনি তার নিজের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে অন্তরায় হিসেবে ভাবতে থাকেন। সেই ভাবনা থেকেই ঈদের দিনে গত সোমবার (১৭ জুন) দিবাগত ভোর ৪টার দিকে বাসার সবার ঘুমের সুযোগে নবম তলা থেকে তাসনিবকে ছুঁড়ে ফেলে হত্যা করে।

খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ সকাল ৮টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে নবজাতকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার ও সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে থানায় নিয়ে আসে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

এদিকে, পুলিশ ঘটনার সময় বাসায় উপস্থিত চিকিৎসক, তার দুই গৃহ পরিচারিকা, স্ত্রী তিশা আক্তার ও তার বান্ধবী সুমাইয়া আক্তারকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারে পুলিশ। সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করলে ডা. ওসমান গণি স্ত্রী তিশা আক্তারকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ অন্যদের ছেড়ে দিয়েছে।

স্বজন ও পুলিশ জানায়, ঈদের দিবাগত রাতে প্রতিদিনের মতো ডা. ওসমান গণির পরিবারের সবাই ঘুমাতে যায়। হঠাৎ ভোর ৪টার দিকে চিকিৎসকের স্ত্রী তিশা আক্তার চিৎকার করে বলতে থাকে তার সন্তানকে পাওয়া যাচ্ছে না। সবাই ঘটনাস্থলে এসে সন্তানকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। ভোরের আলো ফুটতেই এক গৃহ পরিচারিকা জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে নিচের ঝোপে নবজাতকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখতে পান। খবর দেয়া হলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়ে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। বাসায় অবস্থানরত সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদে আসল রহস্য জানা গেছে। স্বামী ডা. ওসমান গণি বাদী হয়ে স্ত্রীকে আসামি করে ভৈরব থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Link copied!