কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পদবঞ্চিতদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পদধারী ও নাগরিক কমিটির (এনসিপি) নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠের এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত আটজন জখম হয়েছেন। আহদের গুরুতর অবস্থায় কুষ্টিয়ার আড়াই শ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির অন্যতম নেতা সুলতান মারুফ তালহা, আলী আহসান মুজাহিদ, আসাদুল, ইব্রাহীম, আলভী ও ইমন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান, সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত পৌনে ৮টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পদবঞ্চিদের একটি অংশ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বর্তমান কমিটির নেতা–কর্মী এবং নাগরিক কমিটির কুষ্টিয়া সদর উপজেলা কমিটিতে ছাত্রলীগ কর্মীদের পদ দেওয়া হয়েছে দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের ঈদগাহপাড়া থেকে।
মিছিলটি কুষ্টিয়া কাটাইখানা মোড়স্থ সমবায় মার্কেটের সামনে পৌঁছলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির নেতারা তাদের বাধা দেন। এ সময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে অন্ততপক্ষে আটজন আহত হন। এর মধ্যে রক্তাক্ত জখম ৬ জনকে কুষ্টিয়ার আড়াই শ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে হাসপাতালেও আরেক দফা হামলার ঘটনা ঘটে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পদবঞ্চিদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব সুজন মাহমুদ বলেন, আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির লোকজন। আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর ফেসবুক লাইভে গিয়ে বলেন, কিছু সন্ত্রাসী আমাদের কাটাইখানা মোড়ে লাইব্রেরির সামনে এসে হুমকি ধমকি দেয় এবং পরে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে আমাদের সহযোদ্ধাদের ওপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরে তাদেরকে কুষ্টিয়ার আড়াই শ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র পারভেজ মোশাররফ বলেন, যারা বর্তমান কমিটিকে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে, তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব ও নাগরিক কমিটির নেতাসহ তাঁদের অন্তত ৮-৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল আলীম বলেন, ‘কলেজ মাঠে একটা ঘটনা ঘটেছে। এরপর হাসপাতালেও সামান্য ঝামেলা হয়। সবখানেই পুলিশ রয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে আমরা কাজ করছি।’
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সল মাহমুদ বলেন, “সংঘর্ষের খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদেরকে কুষ্টিয়ার আড়াই শ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।”