• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভাঙছে নবগঙ্গা নদী, আতঙ্কে এলাকাবাসী


নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৪, ০৫:৫৯ পিএম
ভাঙছে নবগঙ্গা নদী, আতঙ্কে এলাকাবাসী

নড়াইলে নবগঙ্গা নদীর তীব্র ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে কালিয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম। গত ১৫ দিনের অব্যাহত ভাঙনে নদীগর্ভে চলে গেছে বসতভিটা, ফসলি জমি, গাছপালা, কাঁচাপাকা ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে কালিয়া উপজেলা গুরুত্বপূর্ণ বারইপাড়া মহাজন সড়ক, বসত বাড়ি, বাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

সরেজমিনে জানা যায়, কয়েক সপ্তাহ ধরে কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর এলাকায় শুরু হয়েছে নবগঙ্গা নদীর তীব্র ভাঙন। নদীগর্ভে চলে গেছে ঘরবাড়ি, গাছপালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বারইপাড়া মহাজন সড়ক, মানুষের বসতভিটা, কবরস্থান, মসজিদ, পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এই সড়কটি নদী গর্ভে বিলীন হলে তলিয়ে যাবে হাজার হাজার একর ফসলি জমি, ভেসে যাবে শত শত মাছের ঘের।

কাঞ্চনপুর এলাকার বাসিন্দা মো. আলেক শেখ বলেন, “আমাদের বাড়ি ঘর সব নদীতে চলে গেছে। আমাদের মাথা গোঁজার মতো এই বাড়িটাই শুধু ছিল। তাও চলে গেল। ছেলেমেয়েদের নিয়ে খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি।”

একই গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ মুক্তার বলেন, “আমরা খুবই আতংকে দিন পার করছি। এই রাস্তা যদি ভেঙে যায়, তাহলে আমাদের বাড়িসহ আরও বাড়ি নদীতে চলে যাবে। সেই সাথে আমাদের এলাকার সব পুকুর, ঘের, ফসলি জমি নদীতে চলে যাবে।”

নদী ভাঙনে বসতবাড়ি হারিয়ে সর্বস্বান্ত ফুলি বিবি বলেন, “আমার বাড়ি নদীতে চলে গেছে। কোথায় থাকবো, কী করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার আর কোনো জায়গা জমিও নেই। এখন ছেলে মেয়েদের নিয়ে কোথায় থাকবো। খোলা আকাশের নিচে ছাড়া আমার থাকার কোনো জায়গা নেই।”

বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা তবিবুর শেখ বলেন, “আমার সারা জীনের কষ্টের ফসল আমার এই বাড়িটুকু, তাও নদীতে চলে গেলে। অনেক কষ্টে বাড়িটা করেছিলাম। জানি না এখন পরিবার নিয়ে কোথায় থাকবো।”

আঙ্গিনার সবজি ক্ষেত ও বসতবাড়ি হারিয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন হাসি বেগম। তিনি বলেন, “আমার সব নদীতে চলে গেছে। রাতে ঘুম নেই, ঠিকমতো খাবার নেই। কীভাবে রাত দিন পার করছি, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।”

নদী ভাঙনের বিষয়ে জানতে চাইলে নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন বলেন, “আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জরুরিভাবে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি দ্রুতই কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।”

Link copied!