দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তজিম উদ্দিন নামে এক নৈশপ্রহরীকে হত্যার ঘটনায় স্ত্রীর করা মামলায় ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেছেন আদালত। একইসঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্তদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
সোমবার (২৯ মে) দুপুরে দিনাজপুর অতিরিক্ত দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক শ্যাম সুন্দর রায় এ আদেশ দেন। এসময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, চিরিরবন্দর উপজেলার মৃত ছমির উদ্দিনের দুই ছেলে আফজাল হোসেন ও আব্দুল লতিফ। এরমধ্যে আফজাল বসবাস করেন উপজেলার শুকদেবপুর এলাকায় ও আব্দুল লতিফ উত্তর ভোলানাথপুর এলাকায়। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হলেন উত্তর ভোলানাথপুর এলাকার কাচুয়া শাহার ছেলে শামসুল হক।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চিরিরবন্দরে কারেন্টহাট এলাকায় সামসদ্দিন নামে এক ব্যক্তির মিল ও চাতালে নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন তজিম উদ্দীন। ১৯৯৭ সালের ৩১ জানুয়ারি বিকালে তিনি পেশাগত কাজে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আর ফিরেনি। পরে তার স্ত্রী আরজিনা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও স্বামীকে পাননি। এরপর ২ আগস্ট মিল ও চাতালের মালিক সামসুদ্দিন আরজিনাকে এসে জানান, তার স্বামী গত ২ দিন কাজে যাননি। পরে স্ত্রী আরজিনা উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের দামুয়া নামে একটি পুকুরের কচুরিপানার ভেতরে একটি মরদেহ পরে থাকার খবর পান। সেখানে গিয়ে স্ত্রী আরজিনা বেগম মরদেহটি তার স্বামী বলে শনাক্ত করেন। এসময় তিনি তার স্বামীর গলা ও পেটে কাটা অবস্থায় দেখতে পান।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, ঘটনার পর স্ত্রী আরজিনা চিরিরবন্দর থানায় মোখলেছার রহমান, আফজাল হোসেন, আব্দুল লতিফ, শামসুল হক এবং আব্দুল কাফীর নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আব্দুল কাফীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস প্রদান করেন আদালত এবং মোখলেছার রহমান মামলা চলাকালীন সময়ে মারা যান। অপরদিকে হত্যার ঘটনায় বাকি তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের দণ্ডাদেশ প্রদান করেন আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দিনাজপুর জেলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রবিউল ইসলাম রবি বলেন, “জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দীর্ঘদিন পর এই মামলার রায়ে বাদীর পরিবার খুশি।”