নোয়াখালীর সদর উপজেলায় বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্ত ওমানপ্রবাসী আলতাফ হোসেন (২৮)।
বুধবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম।
মো. শহীদুল ইসলাম জানান, বুধবার সন্ধ্যার দিকে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক এস এম মোসলেহ উদ্দিন মিজানের আদালতে মা-মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি আলতাফ।
এসপি জানান, হত্যার ঘটনায় সুধারাম মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। আসামিকে আদালতে হাজির করলে তিনি মামলার ভিকটিম নূর নাহার বেগম (৩৫) ও তার মেয়ে ফাতেহা আজিম প্রিয়ন্তীকে (১৭) ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করার আদালতে স্বীকার করেন।
দোষ স্বীকার করে আসামি আলতাফ হোসেন আদালতে জানান, ভিকটিম নূর নাহার বেগমের সঙ্গে তার ওমান থাকা অবস্থায় রং নম্বরে পরিচয় হয় এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে নূর নাহার বেগম আসামিকে ভিসা বাতিল করে বাংলাদেশে এসে হোটেল ব্যবসা করার জন্য বলেন। তার কথায় আলতাফ ৮ জুন বাংলাদেশে এসে দত্তের হাট এলাকার মাসুদ নামের এক ব্যক্তির মেসে ওঠেন। ১০ জুন সাড়ে ১০টার দিকে নূর নাহারের বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন। পরদিন ১১ জুন পুনরায় নূর নাহারের বাসায় গিয়ে প্রতিশ্রুত ৩ লাখ দাবি করে। কিন্তু নূর নাহার টাকা গিতে গড়িমসি করেন।
বুধবার ১৪ জুন বেলা সাড়ে ১০টার দিকে আলতাফ ভিকটিম নূর নাহারের বাসায় গিয়ে আবারও ৩ লাখ টাক দাবি করেন। ওই সময় ভিকটিম টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় আলতাফ ছুরি দিয়ে নূর নাহারের গলায় আঘাত করেন। এ সময় নূর নাহার পাশের রুমে চলে যান। ওই রুমে তার মেয়ে প্রিয়ন্তী ছিল। আলতাফ ওই রুমে গিয়েও নূর নাহারকে ছুরিকাঘাত করতে থাকেন। মাকে বাঁচাতে প্রিয়ন্তী এগিয়ে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করেন আলতাফ।
আলতাফ হোসেন লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মুনাফের বাড়ির মৃত আবুল কালামের ছেলে এবং ওমানপ্রবাসী।
নিহতরা হলেন নোয়াখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফজলে আজিম কচি মিয়ার স্ত্রী নূর নাহার বেগম ও তার মেয়ে হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ফাতেমা আজিম প্রিয়ন্তী।