বরগুনায় ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আপৎকালীন আশ্রয়ণ কেন্দ্র মুজিব কিল্লার বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি মুজিব কিল্লার ভেতর ও বাইরের দেয়ালে ফাটলগুলো স্থানীয়দের নজরে আসে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে এমন ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
জানা যায়, বরগুনার তালতলীতে তামাতু টিলায় আপৎকালীন আশ্রয়ণ কেন্দ্র (মুজিব কিল্লা) নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কার্যাদেশ পান পটুয়াখালীর সোনালী ট্রেডার্সের মালিক সঞ্জয় কুমার কর্মকার। প্রকল্পটি ওই অর্থবছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে তা ভেস্তে যায়। তবে হস্তান্তরের আগেই গত বছরের ১৩ অক্টোবর ভবনটি উদ্বোধন হয়েছে এমন সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন ঠিকাদার। প্রকল্পে মাটির কাজ, ভবনের স্লোপ, ভিমের লিংটেন, ক্যাটল শেডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করা হলেও তা অত্যন্ত নিম্নমানের হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, “মুজিব কিল্লা নির্মাণের সময় নিম্নমানের সমগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে ঠিকাদারের লোকজন আমাদের হুমকি দেয়। তারা বলে আমাদের দেখার দরকার নাই।”
ওই এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী নিজাম বলেন, “আমরা দেখছি, মুজিব কিল্লায় ফাটল ধরেছে। কী কারণে মুজিব কিল্লা ভবনে ফাটল দেখা দিল, আমরা এর ব্যাখ্যা বুঝতে চাই না। ফাটলের কারণে আমরা আতঙ্কিত।”
ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম লিটু বলেন, “মুজিব কিল্লা ভবনের কাজে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করানো হয়েছে। আমি একাধিকবার তাদের বলতে গেলে তারা বলে ‘উন্নয়ন কাজে বাধা দিতে আসিয়েন না’। এমনকি তারা চাঁদাবাজি মামলা দেওয়ার হুমকি দেয় আমাকে।”
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোনালী ট্রেডার্সের মালিক সঞ্জয় কুমার কর্মকার বলেন, “ভবনটি এখনো হস্তান্তর করা হয়নি। যে সব স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে সেগুলো সংস্কার করে ভবনটি হস্তান্তর করা হবে।”
মুজিব কিল্লা প্রকল্পের প্রকৌশলী মো. শামছুদ্দোহা বলেন, “ভবনের কিছু স্থানে ফাটল আছে। এটা ঠিকাদারকে একাধিকবার ঠিক করে দেওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু তিনি ঠিক করে দিচ্ছেন না। ফাটলে সংস্কার না করা পর্যন্ত ঠিকাদারকে ফাইনাল বিল দেওয়া হবে না। আর আমরা ভবনটি বুঝেও নেব না।”
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুহিবুল ইসলাম বলেন, “এ বিষয়টি দেখভাল করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। আসলে আমাদের হাতে তেমন কিছু নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”