টাঙ্গাইলে এমপি-মেয়রের মাঠের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব গড়িয়ে জলে ভর করেছে। একই স্থানে পাল্টাপাল্টি নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে টাঙ্গাইল-২ আসনের (ভূঞাপুর-গোপালপুর) সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির এবং ভুঞাপুর পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক মাসুদ। উপজেলার গোবিন্দাসী ঘাট যমুনা নদীতে উভয় পক্ষের আয়োজন ঘিরে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে একপক্ষ আরেকপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করছে।
আয়োজক কমিটির সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোবিন্দাসী নৌকা ঘাটের যমুনা নদীতে ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর সংসদ সদস্য ছোট মনিরের উদ্যোগে নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়। অপরদিকে একই স্থানে ১৯-২০ ও ২২-২৩ সেপ্টেম্বর দুই দফায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী, ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভুঞাপুর পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক মাসুদের উদ্যোগে চারদিনব্যাপী নৌকাবাইচের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে সংসদ সদস্য ছোট মনির ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক মাসুদের আয়োজক কমিটির সদস্যরা এলাকায় মাইকিং শুরু করেছেন। এতে উভয়পক্ষের প্রস্তুতি ঘিরে উত্তেজনাও দেখা দিয়েছে।
এদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ছোট মনির এবং ভূঞাপুর পৌরসভার মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক মাসুদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। এর মধ্যে গোবিন্দাসীর নৌকা ঘাটে দুইপক্ষের নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা বর্তমানে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।
এমপি গ্রুপের নৌকাবাইচ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম খোকা বলেন, “এমপি ছোট মনির মহোদয়ের উদ্যোগে ১৯-২০ সেপ্টেম্বর নৌকাবাইচের আয়োজন করেছি এবং প্রশাসনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। উল্লেখিত তারিখেই নৌকাবাইচ হবে। নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে ঘাট এলাকায় মঞ্চ ও সড়কের বিভিন্ন স্থানে তোরণ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।”
মেয়র গ্রুপের নৌকাবাইচ কমিটির আহ্বায়ক ও গোবিন্দাসী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরাম উদ্দিন তারা মৃধা বলেন, “নৌকা বাইচ বানচাল করতে এমপি গ্রুপ আরেকটি নৌকাবাইচের আয়োজন করেছে। চার দিনব্যাপী নৌকাবাইচ হবে এজন্য এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছি।”
ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ্ জানান, “দু’পক্ষের নৌকাবাইচে যাতে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর আগে ইতোমধ্যে দুইপক্ষের আবেদনের অনুলিপি পেয়েছি। জেলা প্রশাসক বরাবর দুইপক্ষই আবেদন করেছে।“
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলাল হোসেন বলেন, “নৌকাবাইচের জন্য উভয়পক্ষের আবেদন পেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করেছি। এছাড়া আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে যারা থাকবেন তারা দায়িত্ব পালন করবেন। তবে পরিস্থিতি ভিন্ন রকম হলে আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর চাহিদা অনুযায়ী পরবর্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে সকল বাহিনী কাজ করছে।”