ছাগল-কাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের স্ত্রী, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকীর খোঁজ মিলেছে। দীর্ঘ ১৪ দিন পর জনসম্মুখে এসেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট সম্পর্কিত দুটি প্রস্তুতি সভায় অংশ নেন তিনি। তবে সেখানে সাংবাদিকদের উপস্থিতি চাননি। এসময় অফিসের বাইরে তার বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন। মিটিং শেষে বের হলে সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান লাকী।
এর আগে গত ১৩ জুন সর্বশেষ অফিস করেছেন লায়লা কানিজ লাকী।
জানা যায়, ছাগলকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে রায়পুরার উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকি আত্মগোপনে ছিলেন। তাকে কার্যালয় অথবা বাড়ি বা তার ওয়ান্ডার পার্ক ও ইকো রিসোর্ট কোথাও দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি করে উপজেলা পরিষদে আসেন লাকী। পরে তিনি দুটি প্রস্তুতি সভায় যোগ দেন। সভা শেষে তিনি নিজ কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মী ও ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। সভা চলাকালীন ভেতরে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। সভা শেষে বের হলে সাংবাদিকরা কথা বলতে চাইলে কোনো কথা না বলেই গাড়িতে উঠে চলে যান।
জানা যায়, সরকারি তিতুমীর কলেজের সহযোগী অধ্যাপকের চাকরি ছেড়ে ২০২২ সালে রাজনীতিতে এসেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান হন লায়লা কানিজ। আছেন জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে। ছাগল-কাণ্ডের পর তার নামে থাকা সম্পদের বিবরণ শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।
স্থানীয়রা বলছেন, লায়লা কানিজের বাবা কফিল উদ্দিন আহম্মদ ছিলেন একজন খাদ্য কর্মকর্তা। তার মেয়ে লায়লা কানিজ সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করলেও রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের সঙ্গে বিয়ের পর তার ভাগ্য খুলে যায়। গত ১৫ বছরে তার সম্পদ লাফিয়ে বেড়েছে। তিনি এসব সম্পদ গড়েছেন তার স্বামী আলোচিত রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের অবৈধ উপার্জনে। শিক্ষকতার আয়ে বা পেনশনের টাকায় তার এত সম্পদ থাকার কথা নয়।
এদিকে চেয়ারম্যান অফিস না করার কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবা প্রত্যাশীরা। তাদের অভিযোগ, ঈদের ছুটি শেষে অফিস খোলার পর বুধবার (২৬ জুন) পর্যন্ত তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। ওই সময় অনেক ভুক্তভোগী উপজেলা পরিষদে এসেও তাকে না পেয়ে ফিরে গেছেন। এতে সেবাবঞ্চিত হয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি শুধু বলেছেন, “এটা তার এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না।”