বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় দিনদুপুরে দুর্বৃত্তরা বাসায় ঢুকে উম্মে সালমা (৫০) নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে গুম করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (১০ নভেম্বর) বেলা ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে দুপচাঁচিয়া সদরের জয়পুরপাড়া এলাকায় ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’ নামে বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত উম্মে সালমা দুপচাঁচিয়া ডিএস ফাজিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের স্ত্রী। আজিজুর রহমান শিক্ষকতার পাশাপাশি দুপচাঁচিয়া উপজেলা মসজিদের খতিব এবং ইমাম-মুয়াজ্জিন সমিতির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। এ ছাড়া তার একটি ট্রাভেল এজেন্সি প্রতিষ্ঠানও আছে।
খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ডাকাতির উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা ওই বাসায় ঢুকেছিল। তবে বাসা থেকে কোনো কিছুই খোয়া যায়নি।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড থেকে সামান্য অদূরে বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কসংলগ্ন ৪ তলা ‘আজিজিয়া মঞ্জিলে’ পরিবার নিয়ে থাকেন আজিজুর রহমান।
তিনি রোববার সকাল ১০টার দিকে বাসা থেকে মাদ্রাসার উদ্দেশে বের হন। তার ছেলে শাদ বিন আজিজুর রহমান দুপচাঁচিয়া ডিএস মাদ্রাসার আলিম প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনিও সকালের দিকে মাদ্রাসায় যান। বাড়িতে উম্মে সালমা একা ছিলেন।
শাদ বিন আজিজুর রহমান জানান, তারা ভবনের তৃতীয় তলায় থাকেন। সকালে মাদ্রাসায় যাওয়ার পর আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে মায়ের সঙ্গে মুঠোফোনে শেষ কথা হয় তার। দুপুরে খাওয়ার জন্য বেলা ২টা নাগাদ বাসায় গিয়ে দেখেন, বাইরে থেকে তালা লাগানো। এরপর তার কাছে থাকা বিকল্প চাবি দিয়ে বাসার ভেতরে ঢুকে দেখেন আলমারি খোলা। একটি কুড়াল এবং হাতুড়ি পড়ে আছে সেখানে। এ সময় মাকে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে বাসার ডিপ ফ্রিজের দরজা আলগা দেখে সেখানে উঁকি দিয়ে দেখেন, ভেতরে তার মায়ের হাত বাঁধা লাশ রেখে দেওয়া হয়েছে।
স্টিলের আলমারি কুড়াল দিয়ে কাটার চেষ্টা হলেও বাসা থেকে কোনো টাকাপয়সা বা স্বর্ণালংকার খোয়া যায়নি বলে জানান শাদ বিন আজিজুর।
আজিজিয়া মঞ্জিল-এর ৪ তলা বাসার প্রথম তলার বাসিন্দা মাসকুরুর রহমান জানান, ঘটনার সময় তারা বাসায় ছিলেন না। দিনদুপুরে বাসায় ঢুকে এভাবে গৃহবধূকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে লাশ গুম করায় আশপাশের বাসায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।