ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা আফসানা বেগম। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামে পাঁচ সদস্যের পরিবার চালাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। প্লাস্টিক দিলে মিলবে চাল, ডাল, চিনি ও মুরগিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য।৷ এমন খবরে তিন কেজি প্লাস্টিক নিয়ে আসেন তিনি। প্লাস্টিক দিয়ে পেয়েছেন ব্যাগভর্তি বাজার৷ এমন বাজার করতে পেরে খুশি আফসানা বেগম।৷
আফসানার মতন আরও তিন শতাধিক মানুষ ব্যাগ-বস্তায় করে প্লাস্টিক নিয়ে এসেছেন। কেউ ২ কেজি, কেউ ১০ কেজি, কেউ আবার নিয়ে এসেছেন ২০ কেজি প্লাস্টিক। প্লাস্টিক জমা দিয়ে বাজার কিনছেন নিজের পছন্দমতো।
ঠাকুরগাঁও পৌর কমিউনিউটি সেন্টারে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এমন আয়োজনে করা হয়। প্লাস্টিক দিলেই মিলছে ১৬ প্রকারের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে ভিন্নধর্মী বাজারের আয়োজন করেছে সংস্থাটি।
ব্যাগভর্তি বাজার পেয়ে আফসানা বেগম বলেন, “অভাবের সংসারে নুন আন্তে পান্তা শেষ হয়ে যায়। আজকে প্লাস্টিক নিয়ে এসে চিনি, মুরগি পেলাম। এটা আমাদের মতন নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য অনেক বড় উপকার। দুবেলা পেট ভরে তৃপ্তি করে খাওয়া যাবে। যারা আয়োজন করেছে আল্লাহ তাদের ভালো করুক।”
প্লাস্টিক দিয়ে পণ্য নিতে আসা জুলেখা বেগম বলেন, “বর্তমান সময়ে সব জিনিসের দাম অনেক বেশি সেই তুলনায় এই অল্প পরিমাণ প্লাস্টিক দিয়ে আমাদের যেই পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে তাতে আমি খুব খুশি। কিছুদিন পরপর যদি এমন আয়োজন করা হয় তাহলে আমাদের জন্য খুব ভালো হয়।”
আলামিন নামের এক রিকশাচালক বলেন, “আমি ১৫ কেজি প্লাস্টিক এনেছিলাম, সেটা দিয়ে আজকে আমি ব্যাগভর্তি বাজার নিয়েছি। মুরগি, মাছসহ বিভিন্ন ধরনের বাজার নিয়েছি। অনেকদিন পরে আমরা এরকম একটা বাজার করতে পেরেছি। তাতে খুব খুশি লাগতেছে। আমার পরিবার অনেক খুশি হবে। আজ খাওয়া দাওয়া ভালো হবে।”
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক শিহাব মিয়া বলেন, “প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোরের আয়োজন করা হয়েছে। জেলার তিন শতাধিক পরিবারের মাঝে আমরা ১৬ প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দিচ্ছি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে স্বস্তির পাশাপাশি প্লাস্টিক ব্যবহারে অনুৎসাহী করা হচ্ছে।”
ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা সরদার শাহীন বলেন, “প্লাস্টিকের ব্যবহারে প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এতে ভয়াবহ হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে চারপাশ। ব্যতিক্রমী এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। এর ফলে সচেতনতার সঙ্গে স্বস্তি পাবেন উপকার ভোগীরা। এমন আয়োজন অব্যহত থাকুক।”