নিত্যনতুন আবিষ্কার মানুষকে কৌতুহলী করে তোলে। সমুদ্রের কাছে এমনই এক `দানব`-এর আবিষ্কার দেখে ভিড় করছে কৌতুহলী পর্যটকরা। এই `দানব` তৈরি হয়ে প্লাস্টিকের বর্জ্যে। হ্যাঁ, প্লাস্টিকের ব্যবহারে জনগণকে সচেতন করতেই এই `দানব `-এর আবিষ্কার।
বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের বালিয়াড়িতে স্থাপন করা হয়ে এই ‘দানব’। যা প্লাস্টিকের বর্জ্যে তৈরি করা। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নমুনা প্রদর্শনী হিসেবে এই প্লাস্টিক দানব তৈরি করা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তায় দানবটি বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
সমুদ্র সৈকতে প্রতিবছর লাখো পর্যটক ঘুরতে যান। পর্যটকদের ফেলা ময়লা-আবর্জনায় সৈকতের পাশে সয়লাব হয়ে পড়েছে। প্লাস্টিকের তৈরি চিপসের প্যাকেট, কাঁচের বোতল, ছেঁড়া জুতা, ছেঁড়া জালসহ নানা আবর্জনা সেখানে ফেলা হয়। এতে নষ্ট হচ্ছে সাগর ও সৈকতের পরিবেশ।
পর্যটকদের ফেলা এসব আবর্জনার কারণে দিন দিন সৌন্দর্য হারাচ্ছে সমুদ্র সৈকত। সেই সঙ্গে হুমকির মুখে পড়েছে সাগরের জীববৈচিত্র্য। এসব পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে সচেতনতার লক্ষ্যে এ বিশালাকৃতির প্লাস্টিক দানব তৈরি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, ১৬ জন স্বেচ্ছাসেবক ৭ দিনের প্রচেষ্টায় এই দানব তৈরি করেছে। শুধু তাই নয়, দানবের পাদদেশে ময়লা-আবর্জনা রাখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
প্লাস্টিক দানব তৈরির মূল পরিকল্পনাকারী হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থী আবির কর্মকার। এই আবিষ্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, “কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকত থেকে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক সংগ্রহ করে এ দানব তৈরি করা হয়েছে। এর উচ্চতা ৩৮ ফুট ও প্রস্থ ১৪ ফুট। প্লাস্টিক রোধে মানুষের কাছে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিবে এটি।”
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, সমুদ্র সৈকত এলাকায় অতিরিক্ত প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন। সমুদ্রকে রক্ষা করতে পারলে রক্ষা হবে পরিবেশ ও প্রকৃতি।
এদিকে পর্যটকরা জানান, বিশাল আকৃতির এ প্লাস্টিক দানব সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াবে। প্লাস্টিক দূষণরোধে এটি সচেতনতার জন্য ভালো কাজ করবে।