জামালপুর শহরের দয়াময়ী মোড়ের বংশখাল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি বানর ঘুরে বেড়াচ্ছে। খাবারের আশায় ক্ষুধার্ত বানরটি নির্বাক চোখে ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকছে। অভুক্ত বানরের ক্ষুধার জ্বালা যেন কেউই শুনছে না। এতে বানরটি দুর্বল হয়ে পড়ছে।
বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে পরিচিত বানর। তেমনি এদের বাসস্থান বা খাবারে বেশ বৈচিত্র্য রয়েছে। এরা সাধারণত দল বেঁধে বসবাস করতে ভালোবাসে। ভুল পথে চলতে গিয়ে এদিক-সেদিক লাফালাফি করতে করতে নিজের অজান্তেই সঙ্গীদের হারিয়ে ফেলেছে শহরে আসা এ বানর।
ছালাম হোটেলের কর্মচারী ডিপজল বলেন, “দুই দিন আগেও বানরটি হোটেলের চালের ওপরে এসেছিল খাবারের জন্য। খেতে রুটি দিয়েছিলাম, অল্প খেয়েই চলে গেছে। ভয়ে নিরুপায় বানরটি কিছু খাবারের আশায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাকে সবাই মিলে সহযোগিতা করা দরকার।”
শহরের দয়াময়ী মোড়ের বাসিন্দা মো. ওবাইদুর রহমান বলেন, “স্থানীয় পরিবেশের ভারসাম্য হারানোর কারণে প্রকৃতি থেকে খাবার গ্রহণের কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না বানরটি। তাই খাবারের আশায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলনের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে বানরটি খাদ্যের সন্ধানে মধুপুর অথবা শেরপুর অঞ্চলের জঙ্গল থেকে লোকালয়ে চলে এসেছে। একদিকে ক্ষুধার্ত অপরদিকে শিশু-কিশোরদের তাণ্ডবে বিব্রত অবস্থায় বানরটি এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছে। বিশেষ করে শহরের বংশখালের রাণীগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে দয়াময়ী মোড়ের দক্ষিণে গফুর ভিলা পর্যন্ত তার অবাদ বিচরণ।“
বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল বলেন, “বানরটি মাঝেমধ্যেই তার বাসায় খাবারের জন্য চলে আসে। কিন্তু লোকজনের ভয়ও আছে চোখেমুখে। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) বিকালে বানরটি বাসার দিকে আসার পথে তিন বখাটে তাড়া করে নকিব উদ্দিন হাসপাতালের দিকে নিয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “বানরটিকে উদ্ধারের জন্য বন বিভাগের কর্মকর্তাদের এগিয়ে আসা দরকার। প্রতিনিয়ত তাড়া খেতে খেতে নিরীহ প্রাণিটি আত্মরক্ষার জন্য হিংস্র হয়ে উঠছে। যে কোনো সময় অমানুষদের খপ্পরে পড়ে মারা পড়তে পারে।”
শেরপুর বন বিভাগের রেঞ্জার আব্দুল্লাহ আল আমিনের বলেন, “বানরটিকে কেউ অত্যাচার না করলে কিংবা খাদ্য দিলে কারও কোনো ক্ষতি করবে না। তবে দ্রুত এটিকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার দাবি করেছেন এলাকাবাসী।”