শেরপুরে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে শরিফা, রামবুটান ও এলাচ চাষ। বাগানের উদ্যোক্তা মনিরুজ্জামান জানান, তিনি আরও পাঁচ প্রকারের ফলের চারা একই বাগানে রোপণ করেছেন। ইতিমধ্যে ওই বাগান থেকে কয়েক লাখ টাকা আয় করেছেন। জেলা সদরের লছমনপুর ইউনিয়নের কাজীর চর এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে ওই বাগান।
মনিরুজ্জামানের বাড়ি শেরপুর সদর উপজেলার ১০ নম্বর চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের সাতপাকিয়া গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে।
উদ্যোক্তা মনিরুজ্জামান বলেন, বাগান করার জন্য ২০২০ সালে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাছ থেকে শেরপুর সদরের লছমনপুর ইউনিয়নের কাজীর চর এলাকার ১৮ বিঘা জমি লিজ নেন। চরাঞ্চলের ওই জমি ফসল উৎপাদনের উপযোগী করার জন্য সেখানে প্রথমে ক্যাপসিকাম, লাউ, স্কোয়াশ, পেঁপে ও গাজর আবাদ করেন। পরে ভিয়েতনাম থেকে আনা বীজবিহীন বারোমাসি জাতের ১৬০০ লেবু চারা, ২৫০টি বারোমাসি কাটিমন আম, ৬০টি বল সুন্দরী জাতের বড়ই, ১৫৫টি বারি মাল্টা-১, ১৪টি সুপার টেন জাতের পেয়ারা, ১৪৪টি শরিফা এবং ৪টি রামবুটানের চারা রোপণ করা হয়। এ ছাড়া এলাচের পর্যাপ্ত চারা তৈরি করা হয়েছে, যা আগামী বছরের প্রথম দিকে শরিফা ফল গাছের নিচে ছায়ায় রোপণ করা হবে। আর এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জাতের ফলের চারা সংগ্রহ করতে ১২ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে।
ওই বাগানের পরিচর্যাকারী মুন্নাফ মিয়া বলেন, ইতিমধ্যে ওই বাগান থেকে কয়েক লাখ টাকার লেবু ও বরই বিক্রি করা হয়েছে। এ ছাড়া মাল্টাগাছে থোকায় থোকায় বিপুল পরিমাণ ফল এসেছে। এখন অন্তত ৯০০ কেজি মাল্টা বিক্রির উপযোগী হয়েছে। পেয়ারাগাছেও ফল আসতে শুরু করেছে। পাশাপাশি রামবুটান ফলের গাছ অনেকটাই বড় হয়ে গেছে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছর থেকে ওই সব গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করা যাবে।
উদ্যোক্তা মনিরুজ্জামান বলেন, “কিছুদিন পর শরিফা গাছের নিচে সাথি ফসল হিসেবে এলাচের চারা রোপণ করা হবে। বিদেশে ঘুরে আমি এই প্রযুক্তি শিখে এসেছি। আমাদের দেশেও শরিফা ও এলাচ একত্র চাষে বিপ্লব সংঘটিত হতে পারে। এভাবে আবাদে প্রতি একর জমিতে বছরে ৩০ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব হবে।”
কৃষকদের আধুনিক কৃষির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে মনিরুজ্জামান জামালপুর শহরের পলিশা বেলটিয়া বাজার এলাকায় গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশ অ্যাগ্রো কম্পজিট ইন্ডাট্রিজ লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান। সেখানে কোকোপিটে (নারকেলের আঁশ বা ছোবড়া থেকে উৎপাদিত সার) চারা তৈরির বেশ কিছু বেড। ওইখানে মৌসুম ভেদে উৎপাদন করা হচ্ছে ক্যাপসিকাম, উন্নত জাতের মরিচ, আলু, টমেটো, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ নানা ধরনের সবজির চারা।
ওই বাগান সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে বাগানের মানোন্নয়নে উদ্যোক্তাকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান।